পুরীর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় স্ত্রী হারানো ব্যক্তির গুরুতর অভিযোগ

Spread the love

জগন্নাথ রথযাত্রার শোভাযাত্রা চলাকালীন ওড়িশার পুরীর শ্রী গুন্ডিচা মন্দিরের কাছে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। সেই ঘটনায় প্রাণ হারানো এক মহিলার স্বামী এবার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেয়নি উদ্ধারকারী দল, দমকল কর্মকর্তারা।’ পুরীর জেলা কালেক্টর সিদ্ধার্থ এস সোয়াইন জানিয়েছেন, ভোর চারটে নাগাদ ভগবান জগন্নাথ ও তাঁর ভাইবোনদের বার্ষিক রথ শোভাযাত্রা দেখতে জড়ো হয়েছিলেন কয়েকশো ভক্ত। সেই সময় জগন্নাথের মাসির বাড়ির পাশে ঘটে যায় এই মর্মান্তির ঘটনা। এই বিষয়ে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে স্ত্রী হারানো সেই ব্যক্তি বলেন, ‘যখন এই ঘটনা ঘটে, তখন কেউ সাড়া দেয়নি, না ফায়ার অফিসার, না উদ্ধারকারী দল, না হাসপাতালের দল। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা, যা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আচার-অনুষ্ঠানের জন্য উপকরণ বহনকারী দুটি ট্রাক রথের কাছে একটি জনাকীর্ণ অংশে প্রবেশ করলে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। যার ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই ঘটনায় মৃতদের নাম বোলাগড়ের বাসন্তী সাহু এবং বালিপাটনার প্রেমাকান্ত মোহান্তি ও প্রতী দাস। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাধীন কুমার পন্ডা বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তিনি এই ঘটনার জন্য সরাসরি প্রশাসনকে দায়ী করেন। তিনি এও দাবি করলেন, রথযাত্রার দিনও নাকি একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল পদপিষ্ট হয়ে। তবে সরকার নাকি সেই সব তথ্য ধামাচাপা দিয়েছিল। এই ঘটনায় প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গতকাল রাত ২-৩টা পর্যন্ত আমি মন্দিরের কাছে ছিলাম, কিন্তু ব্যবস্থাপনা ভালো ছিল না। ভিআইপিদের জন্য নতুন রাস্তা তৈরি করে সাধারণ মানুষকে দূর থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। প্রবেশদ্বার থেকেই লোকজন বের হতে শুরু করায় ভিড় বেড়ে যায়।’ ট্রাফিক ব্যবস্থার সমালোচনা করে পন্ডা বলেন, ‘প্রশাসন ঠিকমতো ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল এক্সিট গেট। রথযাত্রার দিনও বহু মানুষ মারা গিয়েছিলেন, কিন্তু সরকার ও প্রশাসন তা প্রকাশ করেনি এবং কোনও হতাহতের ঘটনা জানায়নি। আজ তিনজন মারা গেছেন- দুজন নারী, একজন পুরুষ। এর জন্য দায়ী ওড়িশা প্রশাসন। রাতে সেখানে কোনও পুলিশ, প্রশাসন ছিল না।’

এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছি। আজ সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছি। ডিজিপিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। বিশাল জমায়েতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এতে ছয়-সাতজন আহত হয়েছেন। আমি নিজে পুরী যাচ্ছি এবং পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছি। আমরা ভিড় সামলানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অবশ্য পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং লোকেরা দর্শন করছে। ডিজিপি ওয়াই বি খুরানিয়া এবং অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং পরিস্থিতি মূল্যায়ন করছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *