প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেয়ায় মেক্সিকোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন পেরুর

Spread the love

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে পেরু। দেশটির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেটসি চাভেজকে আশ্রয় দেওয়ার জেরে এই পদক্ষেপ নিয়েছে সে দেশের সরকার। ২০২২ সালের অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে আদালতে চাভেজের বিচার চলছে।

পেরুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুগো দে জেলা বলেছেন, ‘‘মেক্সিকোর এই পদক্ষেপ অপ্রত্যাশিত এবং দুঃখজনক।’’


তিনি আরো বলেন, “এই অবন্ধুসুলভ আচরণের পর পেরু সরকার আজই মেক্সিকোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”


তবে পেরুর এই সিদ্ধান্তকে “অতিরিক্ত ও অসম্মানজনক” আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে মেক্সিকো।


সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিলোর সংসদ ভেঙে দিয়ে অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতাগ্রহণের চেষ্টা করলে তাকে সহায়তার অভিযোগ ওঠে চাভেজের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের জুনে তাকে গ্রেফতার করা হয়। একই বছর সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি পান তিনি। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চাভেজ।


এদিকে পেরুর অভিযোগ, মেক্সিকোর বর্তমান ও সাবেক প্রেসিডেন্টরা বারবার পেরুর অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করেছেন। দে জেলা বলেন, “তারা অভ্যুত্থানকারীদের ভুক্তভোগী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে, অথচ পেরুবাসী গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।”


আদালতে চাভেজের জন্য ২৫ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করেছেন প্রসিকিউটররা। অপরদিকে অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা গ্রহণের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার আগে পেদ্রো কাস্তিলোর ৩৪ বছরের জেল চাওয়া হয়। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তিনি জেলেই আছেন।

পেরু-মেক্সিকোর এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ২০২২ সালে কাস্তিলোর স্ত্রী ও সন্তানদের আশ্রয় দেওয়ায় মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূতকে ফেরত পাঠায় লিমা। পরের বছর কাস্তিলোর পক্ষে মেক্সিকোর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ বক্তব্য দেওয়ায় মেক্সিকো সিটি থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে পেরু।


কাস্তিলো ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কৃষক ও শ্রমিক সংগঠক। অভিজ্ঞতা কম থাকা সত্ত্বেও তিনি পেরুর প্রথম “গরিব প্রেসিডেন্ট” হিসেবে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনি দেশের দুর্বল অর্থনীতি সংস্কার এবং দরিদ্র মানুষের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সংসদ ভেঙে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তারা তাকে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানান। ফলে তার চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।


দেশজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অপরাধ বৃদ্ধির কারণে গত মাসে তার উত্তরসূরি দিনা বোলুয়ার্তে  ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর কংগ্রেস নেতা জোসে জেরিকে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *