প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন’‌! আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি মমতার

Spread the love

আরজি কর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগের চারতলা। যেখানে রয়েছে চেস্ট ডিপার্টমেন্টের বড় সেমিনার হল। ঘরের ভিতর আছে একটি কাঠের পোডিয়াম। তার উপরেই অর্ধনগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে মহিলা জুনিয়র চিকিৎসককে। চোখ, মুখ এবং যৌনাঙ্গ রক্তাক্ত। সারা শরীরের ১১টি জায়গায় ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। নিম্নাঙ্গে কোনও পোশাক নেই। মহিলা চিকিৎসকের দেহ পড়ে ছিল নীল তোষকের উপর। মাথার কাছে খোলা ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ভাঙা চশমা, চুলের ক্লিপ। শুক্রবার কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এমন অবস্থাতেই মিলল মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ। আর তা এবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে এসে দাঁড়ানোয় অনেকটা স্বস্তিবোধ করছেন তাঁরা। এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। এমনকী জুনিয়র ডাক্তাররা যদি অন্য কোনও এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করাতে চায় তাতে কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‌ফাঁসির পক্ষে আমি নই। তবে কোনও কোনও ঘটনায় শিক্ষা দেওয়ার জন্য এরকম শাস্তি দরকার। যাতে আর কেউ এসব করার সাহস না পায়। আরজি কর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যু ন্যক্কারজনক ও অমানবিক। এই ঘটনাকে কখনওই সমর্থন করা যায় না।’‌

এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে। আর সিপিএম সমালোচনা করেছে রাজ্য সরকারের। যার জবাব আজ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‌আমি গতকাল ঝাড়গ্রামে ছিলাম। রাস্তা থেকে খবর নিচ্ছিলাম। মেয়েটির বাবা–মায়ের সঙ্গেও আমি কথা বলেছি। আমি আমার প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি, দোষীদের চিহ্নিত করে তিন থেকে চারদিনের মধ্যে ফাস্টট্র্যাক আদালতে এই মামলা তুলতে এবং প্রয়োজনে ফাঁসির আবেদন জানাতে। ডাক্তারদের গায়ে যাতে কেউ হাত না দেয়, তার জন্য আমরা প্রত্যেক হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প করেছি। আমরা তো দেখবই। হাসপাতালের সুপার, প্রিন্সিপ্যালদেরও নিরাপত্তাটা দেখতে হবে। তাদের দিক থেকে কোনও গাফিলতি ছিল না,সেটা আমরা খতিয়ে দেখব।’‌

এই ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার অভিযোগে আজ, শনিবার সকাল থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতিতে বসেছেন। লাগাতার চলছে বিক্ষোভ। একাধিক দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। জুনিয়র ডাক্তাররা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, সেটা সঙ্গত বলেই মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তাঁর বক্তব্য, ‘‌ওদের যা দাবি, তার সঙ্গে আমি একমত। তাঁরা যা দাবি জানিয়েছে, পুলিশ সেটা মেনে নিয়েছে। জুনিয়র ডাক্তাররা যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সেটা সঙ্গত বলেই আমি মনে করি। আমি নির্দেশ দিয়েছি, ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলা নিয়ে গিয়ে, দরকার হলে ফাঁসির আবেদন করা হোক। যে কালপ্রিট এটা করেছে, তার কোনও ক্ষমা নেই।’‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *