বিলাসবহুল অফিস, প্রসাদপ্রমো বাংলোতে গোপন বেসমেন্ট। আর তার নেপথ্যে বড় প্রতারণা চক্র। অবশেষে কর্ণাটকের মেঙ্গালুরুতে ৫০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে রোহন সালদানহাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর অভিযোগ, কম সুদে ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহু শিল্পপতি এবং ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, রোহন তার বিলাসবহুল বাংলো এবং অফিস দেখিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলেছিলেন। শুধুমাত্র ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করতেন তিনি। অভিযোগ, রোহন নিজের পরিচয় দিতেন ঋণদাতা হিসেবে। তিনি মেঙ্গালুরুতে তার বিলাসবহুল বাংলো এবং অফিসে গ্রাহকদের ডাকতেন। তাদের বিশ্বাস অর্জনের পর, রোহন ১০০ কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণের প্রস্তাব দিতেন। এই প্রতারণাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে, তিনি ভুয়ো আইনজীবীরও ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। আর বিশেষ বিষয় হল ওই ভুয়ো আইনজীবীদের নাম বিশিষ্ট আইনজীবীদের নামের সঙ্গে মিলে যেত। সেই ভুয়ো আইনজীবীরা নথিপত্র পরীক্ষা এবং অন্যান্য আইনি আনুষ্ঠানিকতার জন্য গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলতেন, যাতে কোনও ধরণের সন্দেহ না হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এরপর রোহন রেজিস্ট্রেশন এবং স্ট্যাম্প ডিউটির নামে গ্রাহকদের কাছে কোটি কোটি টাকা দাবি করতেন। অনেকের কাছে তিনি ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন। আর টাকা নেওয়ার পর হঠাৎ করেই তিনি উধাও হয়ে যেতন। ফলে মাথায় হাত পড়ত গ্রাহকদের। এমন একের পর এক অভিযোগ পেতেই রোহনের বাংলো তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। আর সেখানে গিয়ে পুলিশ যা দেখে, তাতে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার জোগাড় হয় তাঁদের।জানা গেছে, বাংলোটির অন্দরে ছিল বিলাসবহুল সামগ্রি। পাশাপাশি লুকোনোর জন্য রয়েছে গোপন বেসমেন্ট-র ব্যবস্থা। সেখানে পুলিশ ৩-৫ লক্ষ টাকার বিরল প্রজাতির গাছ, একটি ব্যক্তিগত বার কাউন্টার এবং আলমারির আড়ালে লুকিয়ে থাকা গোপন কক্ষ খুঁজে পেয়েছে।যা অনেকদিন ধরে লুকিয়ে থাকার জন্য গোপন আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এখানেই শেষ নয়, বাংলোটিকে ঘিরে রেখেছে হাই-ডেফিনেশন ক্যামেরা।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত রোহন সারা দেশে বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মঞ্জুর করতে পারে এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ দাবি করে প্রতারণা করেছেন।মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ৪০-৫০ কোটি টাকার জালিয়াতি করেছেন তিনি। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রোহনকে জোরদার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই চক্রের নেপথ্যে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।