ফুলটাইম কিলার! পার্টটাইম ইনফ্লুয়েন্সার

Spread the love

বিহার রাজ্যের একটি হাসপাতালে ঢুকে কেবিনে থাকা এক রোগীকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে পাঁচজনের একটি সশস্ত্র দল। এ ঘটনার প্রধান আসামি ২৬ বছর বয়সী তৌসিফ বাদশা অপরিচিত কোনো ব্যক্তি নন। ওই হামলার একদিন পর তৌসিফ সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসছে।

সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালে বিহারের পাটনার পারস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চন্দন মিশ্র নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করে তৌসিফ বাদশার নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র দল। চন্দন মিশ্র নিজেও একজন কুখ্যাত অপরাধী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে এসেছে তৌসিফ বাদশার। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সামনের সারিতে হাঁটছেন এক যুবক, শার্ট খোলা, হাতে বন্দুক। তার হাঁটার ভঙ্গিমায় ভয়ের কোনো চিহ্ন নেই, মুখেও নেই তেমন ছাপ। সরাসরি আইসিইউতে গিয়ে গুলি চালান। মুহূর্তের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চন্দন মিশ্র।

কে এই তৌসিফ বাদশা?

পুলিশ সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, তৌসিফের বাড়ি পাটনার ফুলওয়ারি শরিফ এলাকায়। তার বাবা হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী, মা শিক্ষিকা। পড়াশোনা করেছেন সেন্ট ক্যারেন্স স্কুলে। অস্ত্র আইনে তার বিরুদ্ধে আগেই একটি মামলা ছিল। সম্প্রতি তিনি সুপারি কিলিংয়ের বা চুক্তিভিত্তিক হত্যার জগতে নাম লেখান। কাউকে খুন করতে বা খুনের রসদ জোগাতে টাকা নিতেন তৌসিফ। পাশাপাশি তিনি একজন ইনফ্লুয়েন্সারও। ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবে বেশ সক্রিয় তৌসিফ। প্রায়ই তিনি সামাজিক মাধ্যমে ছবি ও ভিডিও আপলোড করতেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, তৌসিফ বাদশার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে বেশ কিছু রিলস রয়েছে, সেখানে তাকে পাটনার বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি চালাতে দেখা গেছে। এসব রিলসে তিনি আকর্ষণীয় ক্যাপশনও দেন। তেমনি একটি রিলসের ক্যাপশনে তৌসিফ লেখেন, পাটনার রাজা, শহরের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এছাড়া তৌসিফের ইউটিউব চ্যানেলে ১২৯টি শর্টস ভিডিও রয়েছে। এসব ভিডিওর বেশিরভাগই শহরের গ্যাংস্টারদের নিয়ে করা। একটি ভিডিওতে তৌসিফকে এক শিশুকে কোলে নিয়ে গাড়ি চালাতে দেখা যাচ্ছে। শিশুটির সঙ্গে তার সম্পর্ক কী, তা জানা যায়নি।

অন্যান্য ভিডিওতে তৌসিফকে তার সহযোগীদের নিয়ে ঘুরতে দেখা যায়। তৌসিফের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখা আছে, ‘জিস জাঙ্গাল মে তুম শের বানে ঘুমতে হো, উস জাঙ্গাল কা বেখাউফ শিকারি হ্যায় হাম (যে জঙ্গলে তুমি সিংহের মতো হাঁটো, সেই জঙ্গলের আমি ভয়-ডরহীন শিকারি)।

হাসপাতালে হত্যাকাণ্ড নিয়ে যা জানা যাচ্ছে

পাটনার পারস হাসপাতালে হত্যাকাণ্ডের শিকার চন্দন মিশ্রের বিরুদ্ধে ২৪টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত এক ডজনেরও বেশি খুনের অভিযোগ। তিনি চিকিৎসার জন্য প্যারোলে ছাড়া পেয়ে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। পুলিশের নজরদারির মধ্যে পাঁচ জনের সশস্ত্র দল নির্বিঘ্নে হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বেরিয়ে যায়।

এনডিটিভি বলছে, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথম খবর ছড়ায়, ৮টার মধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পুলিশের তৎপরতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই পাঁচ অভিযুক্তের পরিচয় প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, পাটনা এবং বক্সার জেলা থেকে ছয়জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *