বন্ধুকে খুনের অভিযোগে ৮ বছর জেল খাটার পর বেকসুর খালাস যুবক

Spread the love

২০১৭ সালে গড়ফা এলাকায় এক যুবককে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলায় বন্ধুকে খুনের অভিযোগে ৮ বছর ধরে জেল খেটেছেন। কিন্তু, অভিযুক্ত যুবক যে আসল খুনি তা প্রমাণ করতে পারল না পুলিশ। তার ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবককে বেকসুর খালাস করল আলিপুর আদালত। একইসঙ্গে মামলার তদন্ত পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে আদালত।

আদালত সূত্রের খবর, এই মামলায় ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। বিশেষ করে খুনে ব্যবহৃত হওয়া মূল অস্ত্রই নাকি পুলিশ ফরেনসিকের জন্য পাঠায়নি। তাছাড়া, তদন্ত ভুলভাবে পরিচালনা করা হয়েছে। এর জন্য বিচারক পুলিশের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। ২৪ বছর বয়সি চিরঞ্জীব গুপ্তকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। গড়ফা এলাকার ইস্ট-এন্ড পার্কে তাঁর দোতলা বাড়ির প্রথম তলায় বালিশ দিয়ে মুখ ঢাকা অবস্থায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ চিরঞ্জীবের বন্ধু তথা কলকাতার বাসিন্দা রাজা পাইককে গ্রেফতার করেছিল। তখন থেকে তিনি জেলেই আছেন। কিছুদিন আগেই আলিপুরের দায়রা বিচারক সুরজিৎ মণ্ডল তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় বেকসুর খালাস করেছেন।

জানা গিয়েছে, চিরঞ্জীবের মা পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে মাদকাসক্ত। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬.৩০ টা নাগাদ তিনি মেয়ের জন্য ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরেন। সেইসময় চিরঞ্জীব দরজা খুলেছিলেন। পরে চিরঞ্জীবের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা বালিশ এবং একটি বেল্ট উদ্ধার হয়। সেগুলি খুনের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল বলে দাবি করে পুলিশ। অথচ এই সব প্রমাণগুলিকে ফরেনসিকের পুলিশ পাঠায়নি বলে উঠে আসে।

বিচারক মন্তব্য করেন, ‘পুলিশের তদন্তের এই বিষয়টি তদন্ত পদ্ধতি নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে।’ তিনি পুলিশকে প্রশ্ন করেন, খুনে বেল্টটিও কেন পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়নি? যদিও সরকারি আইজীবীর যুক্তি ছিল, চিরঞ্জীবের মোবাইল ফোন রজকের কাছে পাওয়া গিয়েছিল। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে খুনে জড়িত থাকার বিষয়টি জোরদার হচ্ছিল। কিন্তু, আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে প্রশ্ন তোলে কেন একজন খুনি এত অপরাধমূলক প্রমাণ ধরে রাখবে? তার উত্তর দিতে পারেননি সরকারি আইনজীবী। এরপরেই অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস করে আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *