উত্তরবঙ্গে তিন দিন ধরে চলল ভারতীয় সামরিক বাহিনীর ‘তিস্তা প্রহার’। শিলিগুড়ির অদূরে চিকেন নেক এলাকার আশেপাশেই এই মহড়া দেয় ভারতীয় সেনা, আর্টিলারি বাহিনী, বায়ুসেনা। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আবহে বাংলাদেশ লাগোয়া পূর্ব সীমান্তে এই ‘তিস্তা প্রহার’ মহড়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই তিস্তা প্রহারে সেনার ইনফ্যানট্রি, আর্টিলারি, আর্মড কোর, আর্মি অ্যাভিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স এবং সিগনালস অংশগ্রহণ করেছিল। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের বহু কট্টরপন্থী নেতা চিকেন নেক দখল করে উত্তর পূর্ব ভারতকে সমতল থেকে আলাদা করার হুমকি দিয়েছেন। এই আবহে সেনার এই মহড়ায় ঢাকার বুকে কাঁপুনি ধরাতে পারে।
এর আগে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের উত্তরে লালমনিরহাটে নাকি চিনা বায়ুসেনা ঘাঁটি তৈরির জন্যে নাকি সবুজ সংকেত দিয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি এমনই দাবি করা হয়েছিল একধিক রিপোর্টে। এদিকে সত্যি সেখানে চিনা ঘাঁটি গড়ে উঠলে তা ভারতের চিকেনস নেক করিডরের জন্যে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এর আগে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সিকিমে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুবই কাছে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছিল ভারতীয় সেনা। এএনআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর সিকিমের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর মালভূমি উপ-সেক্টরে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের সামরিক দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। পূর্ব হিমালয় পর্বতমালা জুড়ে অবস্থিত এই উপ-সেক্টরটি দেশের সবচেয়ে উঁচু এবং শীতলতম যুদ্ধক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটি। সেখানেই অত্যাধুনিক সরঞ্জাম এবং উন্নত প্রযুক্তিতে সজ্জিত কামান এবং অন্যান্য সাঁজোয়া যান নিয়ে মহড়া দেয় সেনা।
এর আগে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলায় একটি বিমানঘাঁটি নির্মাণ করছে চিন। এদিকে চিনা বিমানঘাঁটি সংক্রান্ত তথ্য নাকি ভারতের কাছেও গিয়ে গৌঁছেছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলা ভারতের ‘চিকেনস নেক’ এলাকার সাথে সংযুক্ত। বাংলাদেশের এই লালমনিরহাট জেলা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলা সংলগ্ন। এই আবহে কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত সংবেদনশীল। এহেন পরিস্থিতিতে চিনকে এই এলাকায় বিমানঘাঁটি নির্মাণের অনুমতি দিয়ে ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি চিন সফরে গিয়েছিলেন মহম্মদ ইউনুস। ভারতের ৭ রাজ্যকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন ইউনুস। তিনি নাকি বলেছিলেন, ‘উত্তর-পূর্বে ভারতের সাতটি রাজ্য স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। তাদের সমুদ্রে পৌঁছনোর কোনও উপায় নেই। এই অঞ্চলে আমরাই সমুদ্রের দেখভাল করি। এটি একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। এটি চিনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণ হতে পারে।’ এরপর থেকেই উত্তরপূর্ব ভারত নিয়ে বাংলাদেশে সঙ্গে ভারতের চাপানউতোর শুরু হয়েছে।