আহমেদাবাহের ডাক্তারি পড়ুয়াদের হস্টেলে ভেঙে পড়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের চাকা একটি ভবনে আটকে থাকতেও দেখা গিয়েছে। যে ভবনে বিমানের চাকা আটকে থাকতে দেখা গিয়েছে, তা আদতে গুজরাট সরকারের অধীনস্থ বিজে মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন ডাক্তারদের হস্টেল। আর এই দুর্ঘটনায় তুতো ভাইকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ চিকিৎসক ঋষি বোস।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দুর্ঘটনার ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেছেন ওই চিকিৎসক। তিনি জানান, ‘আমি এখনও হতবাক।আমার আঙুল কাঁপছে, আমার মন ভেঙে গিয়েছে। আমার ভাই আর নেই। সে হোস্টেলের মেসে বন্ধুদের সঙ্গে স্বপ্ন ভাগাভাগি করছিল, যখন এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা তাকে কেড়ে নিয়ে যায়। গত সপ্তাহে তার বাড়ি আসার কথা ছিল। সে আর কখনও ফিরবে না।’ এদিকে আহমেদাবাদের পুলিশ কর্মকর্তা বিধি চৌধুরী বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ এখনও নিহতদের সংখ্যা যাচাই করছে, যার মধ্যে বিমানটি যে ভবনে ভেঙে পড়েছে সেখানে নিহত ব্যক্তিরাও রয়েছেন।’
এদিকে শুক্রবার এয়ার ইন্ডিয়া এক্স হ্যান্ডলে বিবৃতি প্রকাশ করে লিখেছে, ‘১২ জুন ২০২৫ তারিখে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন গ্যাটউইকগামী ফ্লাইট এআই১৭১ দুর্ঘটনার শিকার হয়। ১২ বছরের পুরোনো বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে ২৩০ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু নিয়ে আমেদাবাদ থেকে টেক অফ করে। কিন্তু আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে। অত্যন্ত দুঃখ ও আফসোসের সঙ্গে আমরা জানাচ্ছি যে, বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনই নিহত হয়েছেন। একমাত্র জীবিত যাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।’ ২৪১ জনের মৃত্যুর খবর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই যাত্রীদের বিস্তারিত তথ্যও দিয়েছে বিমান সংস্থা। বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ‘যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। এই দুর্ঘটনা থেকে একমাত্র বেঁচে যাওয়া যাত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক।’ প্রিয়জনহারা পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। একইসঙ্গে জানিয়েছে, যে কোনও ধরনের সহযোগিতার জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার টিম প্রস্তুত।

অন্যদিকে কলেজের ডিন মিনাক্ষী পারিখ বলেন, ‘হোস্টেলের চারজন এমবিবিএস পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনায় ১৯ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর। তৃতীয় বর্ষের দুই ছাত্রের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, একজন চিকিৎসকের স্ত্রীও নিহত হয়েছেন এবং অন্য চিকিৎসকদের দু’জন আত্মীয় আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর থেকে একজন ডাক্তারের পরিবারের তিন সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন। বাকি সকল ডাক্তার এবং আত্মীয়রা নিরাপদে আছেন।’