বিরলতম রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের

Spread the love

সারা বিশ্বে শুধুমাত্র একজনের শরীরেই রয়েছে। এমনই এক বিরল রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা।ক্যারিবিয়ান দ্বীপ গুয়াদেলুপের বাসিন্দা এক ফরাসি মহিলার শরীরে মিলেছে নতুন ওই রক্তের গ্রুপ। যার নাম ‘‌গোয়াদা নেগেটিভ’‌। এমনটাই দাবি করেছে ফ্রান্সের রক্ত সরবরাহকারী সংস্থা ফ্রেঞ্চ ব্লাড এস্টাবলিশমেন্ট (ইএফএস)। এটাই নাকি বিশ্বে নতুন রক্তের গ্রুপ। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বে।

ইএফএস জানিয়েছে, ১৫ বছর আগে ওই মহিলার অস্ত্রোপচারের আগে রুটিন পরীক্ষার সময় তাঁর শরীরে অজানা এক রক্তের গ্রুপের সন্ধান মিলেছিল।তিনি তখন প্যারিসে থাকতেন। তাঁর বয়স তখন ছিল ৫৪ বছর। তাঁর রক্ত নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। সেই সময় একটি ‘অস্বাভাবিক’ অ্যান্টিবডি শনাক্ত হলেও প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে গবেষণা এগোয়নি। অবশেষে ২০১৯ সালে ‘হাই-থ্রুপুট ডিএনএ সিকোয়েন্সিং’ প্রযুক্তির সাহায্যে এই রহস্য উন্মোচিত হয় এবং একটি জেনেটিক মিউটেশনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। বিজ্ঞানীরা জানান, ‘‌গোয়াদা নেগেটিভ’‌ বিশ্বের নতুন রক্তের গ্রুপ। চলতি মাসের শুরুতে মিলানে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ ব্লাড ট্রান্সফিউশন (আইএসবিটি) এই নতুন রক্তের গ্রুপকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে। ইএফএস জানিয়েছে, এটি পৃথিবীর ৪৮তম রক্তের ‘গ্রুপ সিস্টেম’।

ইএফএস-এর মেডিকেল বায়োলজিস্ট থিয়েরি পিয়ারার্ড জানান, ওই মহিলা বর্তমানে বিশ্বের একমাত্র পরিচিত ‘‌গোয়াদা নেগেটিভ’‌ রক্তের গ্রুপের বাহক। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘তিনিই বিশ্বের একমাত্র ব্যক্তি যিনি নিজের রক্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’ পিয়ারার্ড নিশ্চিত করেছেন যে, ওই মহিলা তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে এই বিরল রক্তের গ্রুপটি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন।তাঁদের জিনের মিউটেশন ঘটেছিল বলে জেনেছেন বিজ্ঞানীরা।এর আগে পর্যন্ত পৃথিবীতে ৪৭ রকম রক্তের গ্রুপের সন্ধান মিলেছিল। থিয়েরি পেয়রার্ড বলেন, ২০১১ সালে ওই মহিলার রক্ত পরীক্ষার সময়ে তাতে ‘অস্বাভাবিক’ অ্যান্টিবডি মিলেছিল। কিন্তু তখন গবেষণার মতো পরিকাঠামো ছিল না। ২০১৯ সালে বিজ্ঞানীরা এই রহস্য কিছুটা ভেদ করেন। ডিএনএ সিকোয়েন্সিং করে বিষয়টি অনেকটাই পরিস্কার হয়।

উল্লেখ্য, বিংশ শতকের প্রথম দিকে এই ‘এবিও’ রক্ত গ্রুপের সিস্টেম আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানীরা। অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হত রক্তের গ্রুপ। এবার ডিএনএ সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে আরও নতুন রক্তের গ্রুপের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *