যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬ এবং স্পেশাল ফোর্সের সদস্যসহ ১০০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হয়েছিল। হাজার হাজার আফগান নাগরিকের তথ্যের সঙ্গে এসব কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয়ও ফাঁস হয়ে যায়। প্রায় চার বছর আগের এই ঘটনা সম্প্রতি সামনে এসেছে।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানে ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের সাথে কাজ করা হাজার হাজার আফগান যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর জন্য আবেদন করে। এর মধ্যে প্রায় ১৯ হাজার আবেদনকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে অসাবধানতাবশত ফাঁস হয়ে যায়।
এর নয় মাস পর ২০২৩ সালের আগস্টে তথ্য ফাঁসের বিষয়টি জানতে পারে তৎকালীন কনজারভেটিভ সরকার এবং তথ্য ফাঁসের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয় মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
এর প্রভাব সম্পর্কিত তথ্য আদালতের এক বিশেষ নির্দেশনার মাধ্যমে গোপন রাখা হয় এবং তথ্য ফাঁসের শিকার আফগানদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ব্রিটিশ সরকার গোপনে আফগানিস্তান রেসপন্স রুট (এআরআর) নামে একটি নতুন পুনর্বাসন প্রকল্প গ্রহণ করতে বাধ্য হয় সরকার।
যে প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৫০০ আফগান যুক্তরাজ্যে এসেছেন এবং আরও দুই হাজার ৪০০ জনকে যুক্তরাজ্যে স্থানান্তরিত করার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রায় চার বছর পর চলতি সপ্তাহে (১৫ জুলাই) হাইকোর্টের একজন বিচারক আংশিকভাবে ওই বিশেষ নির্দেশনা প্রত্যাহার করেন। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে তথ্য ফাঁসের বিশদ বিবরণ, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং এর ফলে যুক্তরাজ্যে বসবাসের অধিকার পাওয়া আফগানদের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।

যার ফলে গণমাধ্যমও প্রথমবারের মতো ঘটনাটি প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ডাটাবেসে থাকা বিস্তারিত কেসনোটগুলোয় ব্রিটিশ বিশেষ বাহিনী এবং গুপ্তচরদের গোপন ব্যক্তিগত তথ্যও রয়েছে। এই তথ্যগুলো আদালতের দ্বিতীয় নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রোধ করা হয়েছিল। গত মঙ্গলবার আদালতের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফাঁস হওয়া তথ্যে তালেবানদের কাছ থেকে সম্ভাব্য ক্ষতির ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের নাম, যোগাযোগের বিবরণ এবং কিছু পারিবারিক তথ্য ছিল।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, গোপন প্রকল্পের আওতায় সাড়ে চার হাজার আফগান যুক্তরাজ্যে পৌঁছাতে পারলেও ফাঁস হওয়া নথিথে থাকা এখনও ৬০০ আফগান সেনা এবং তাদের পরিবারের ১ হাজার ৮০০ সদস্য এখনও আফগানিস্তানে রয়েছেন।
প্রকল্পটি এখন বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। তবে যারা আফগানিস্তানে রয়ে গেছেন এবং যাদের আবেদন এরই মধ্যে গৃহীত হয়েছে তাদেরকে যুক্তরাজ্যে আনা হবে।