বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে তরজা

Spread the love

প্রয়াত হয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর তাঁর মৃত্যুতে ছুটি দেওয়া নিয়ে বিজেপি–তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে তুমুল রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হল। আর সেটা দেখা গেল খোদ কলকাতা হাইকোর্টে। এই ঘটনা নিয়ে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট ছুটি দেওয়ার পক্ষে এবং বিপক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত আইনজীবীদের বড় সংগঠন—বার অ্যাসোসিয়েশনের তিন কর্তা তিনটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেন। আর তাতে কার ক্ষমতা কত বেশি সেই প্রতিযোগিতায় নেমে পড়লেন তাঁরা। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কেউ কল্পনাও করেননি।

তৃণমূল কংগ্রেস প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে যখন ছুটি দেওয়ার পক্ষে, তখন বিজেপি সেই ছুটির বিপক্ষে বিজ্ঞপ্তি দেয় বলে খবর। আর এই ক্ষমতা প্রদর্শনের লড়াইয়ের মধ্যে বাস্তবে দেখা গেল শুক্রবার সকাল থেকে ছুটির মেজাজে কলকাতা হাইকোর্ট। সকালে বিচারপতিরা এজলাসে বসলেও শুনানি হয়েছে হাতে গোনা। কারণ কোট, গাউন রাখার এবং বসার বার রুমগুলি বন্ধ ছিল। ফলে আইনজীবীরা কলকাতা হাইকোর্টে এলেও সেখানে প্রবেশ করতে পারেননি। একটা অলিখিত অচলাবস্থা তৈরি হয়ে গেল। আর তার জেরে বিচারের আশায় যাঁরা এসেছিলেন খালি হাতে তাঁদের ফিরে যেতে হল।

অন্যদিকে এই অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় বিচার পাননি অনেক মানুষজন। যাঁদের বিচার হওয়ার কথা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ছুটির মেজাজ তৈরি হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বার অ্যাসোসিয়েশনের এই আচরণে প্রচণ্ড বিরক্ত বিচার বিভাগের অফিসার থেকে বর্ষীয়ান আইনজীবীরা। কারণ তাঁরাও শুনানি আছে বলেই এসেছিলেন। কিন্তু এসে হয়রানি হতে হয়েছে। তাঁদের মতে, একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুতে ছুটি দেওয়ার মতো সামান্য ঘটনায় যে আড়াআড়িভাবে বিভাজন প্রকাশ্যে এল, তাতে আগামী দিনে এই বোর্ড আইনজীবীদের উন্নয়নে আদৌ কোনও সিদ্ধান্ত একযোগে নিতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম আইনজীবীদের সংগঠন বার অ্যাসোসিয়েশনের তৃণমূলপন্থী সদস্যরা বৈঠক করে ছুটি ঘোষণা করার বিজ্ঞপ্তি দেন। তার দু’‌ঘণ্টার মধ্যে বিজেপিপন্থী আইনজীবীরা পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দেয়। আর আগের বৈঠকের বৈধতা নেই প্রশ্ন তোলেন। আর তারপরই আগের বিজ্ঞপ্তিতে থাকা ছুটির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেওয়া হয়। তারপর মাঝরাতে বার অ্যাসোসিয়েশনের তৃণমূলপন্থী সভাপতি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছুটির পক্ষে সায় দিয়ে দেন। সুতরাং আসলে কবে ছুটি?‌ এই প্রশ্নের উত্তর কেউ পাননি। ফলে যে যেমন পেরেছেন ছুটি নিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *