হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতে একটি অভিযোগ নিষ্পত্তি সভার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর সমালোচনার মুখে পড়েছেন অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া কঙ্গনা রানাওয়াত। ক্লিপটিতে তাঁকে একজন বয়স্ক ব্যক্তির সাহায্যের আবেদন প্রত্যাখ্যান করতে দেখা যায়, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে, বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
কঙ্গনা তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করার কয়েকদিন পরেই এই ভিডিয়োটি সামনে এল। রেডিট-সহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে কঙ্গনাকে একটি অভিযোগ নিষ্পত্তি বৈঠকে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, এক বৃদ্ধ কঙ্গনার পায়ের কাছে বসে বিনীতভাবে তাঁর সমস্যা সমাধানের জন্য অনুরোধ করছেন। কঙ্গনাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনি এটা মুখ্যমন্ত্রীকে বলুন, যে কাজগুলি কেবল একজন মুখ্যমন্ত্রীই করতে পারেন, তা আমাকে কেন বলছেন?’ এরপর ওই বৃদ্ধকে কঙ্গনাকে আরও বলেন যে, তিনি বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করবেন।
এরপরই কঙ্গনা তাঁকে আশ্বাস দেন যে তিনি তাঁকে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ, আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সাহায্য করবেন। ভিডিয়োর এক পর্যায়ে দেখা যায়, কেউ একজন হস্তক্ষেপ করে বৃদ্ধকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তবে কঙ্গনাকে তাঁকে এড়িয়ে যেতে দেখা যায়, পরিবর্তে লোকটির সাথে কথোপকথন চালিয়ে যান তিনি।
কঙ্গনার এই ভিডিয়োটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, অনেকেই কঙ্গনার এই প্রতিক্রিয়াকে অসংবেদনশীল বলে সমালোচনা করেছেন। বৃদ্ধের পায়ের কাছে না বসা তাঁর পাশে বসতে না বলার জন্য কেউ কেউ তাঁর সমালোচনা করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘অভিনেত্রী থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া সহজ, তারপর বুঝতে পারেন যে কাজটি তার প্রত্যাশার চেয়ে কঠিন’, একজন লিখেছেন, ‘কেন এই বৃদ্ধ লোকটিকে মাটিতে বসিয়ে রাখবেন? লজ্জা লাগছে!’ আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘এর সঙ্গে আসা দায়িত্ব যদি তিনি নিতে না পারেন, তাহলে রাজনীতিতে এলেন কেন?’ একজন লিখেছেন, ‘নির্লজ্জ মহিলা।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘বলিউড অভিনেত্রী রাজনীতিবিদ হয়ে উঠলে এটাই হয়, যেমন হেমা মালিনী, স্মৃতি ইরানি, এখন কঙ্গনা রানাওয়াত।’ ‘ওঁর পায়ের কাছে বসে আছেন বৃদ্ধ লোকটি তাও একটি চেয়ার অফার করেনি বসতে,’ একজন পোস্ট করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘কঙ্গনা রাজনীতির জন্য অযোগ্য।’

একজন লিখেছেন, ‘এটা লজ্জাজনক যে তিনি তার দাদুর বয়সের এক বৃদ্ধকে পায়ের সামনে বসে সাহায্য চাইতে বাধ্য করছেন, অথচ তিনি অস্বীকার করেছেন যে এটি তার বিভাগ বা উদ্বেগ নয়, তাহলে তিনি কী কারণে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন’।
নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে কঙ্গনা ইউটিউব চ্যানেল ‘আত্মমান ইন রবি’ (আকাশবাণী)-তে একটি পডকাস্টে নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ার নিয়ে কথা বলেন। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে বিজেপিতে যোগ দেন কঙ্গনা। কঙ্গনা জানান, প্রস্তাব পাওয়ার পরই তিনি রাজনীতিতে পা রাখেন। উপভোগ করছেন কিনা জানতে চাইলে কঙ্গনা বলেন, ‘আমি এটা মেনে নিচ্ছি। আমি বলব না যে আমি এটা (রাজনীতি) উপভোগ করছি। এটা অনেকটা অন্যরকমের একটা কাজ, অনেকটা সমাজসেবার মতো। এটা আমার ব্যাকগ্রাউন্ড নয়। আমি কখনও মানুষের সেবা করার কথা ভাবিনি। আমি নারীদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছি, কিন্তু সেটা ভিন্ন। কিন্তু আমি তো সাংসদ, এঁরা পঞ্চায়েত স্তরের সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসছেন’।