ভারতের শীর্ষ অফিসারদের পথ দেখায় এক ২০০ পাতার গোপন ম্যানুয়েল!

Spread the love

পাকিস্তানের সঙ্গে গত কয়েকদিনে শুধু যে সশস্ত্র সংঘাত ছিল ভারতের তা নয়। সঙ্গে ছিল প্রবল এক স্নায়ুযুদ্ধ। শত্রুকে রণকৌশলে, মস্তিষ্কের যুদ্ধে কুপোকাত করার পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে কী কী করণীয়, তাও ছিল তাবড় দায়িত্বের দিক। শীর্ষ অফিসারদের গত এক সপ্তাহ ধরে পথ দেখিয়েছে এক ২০০ পাতার গোপন ম্যানুয়েল। যা ‘পাবলিক ডোমেন’ এ নেই। কার্যত এই নথিই ভারতের অফিসারদের কাছে সংঘাতের এই কয়েকদিনে ছিল ‘হ্যান্ডবুক’র মতো! কী জানা যাচ্ছে এ সম্পর্কে। 

রঙ নীল, সংস্করণ নির্দিষ্ট সংখ্যক, এমনই এক ম্যানুয়েল (নথি) পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের এই সশস্ত্র সংঘাতে শক্তি যুগিয়েছে ভারতকে। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ খোঁজ নিয়েছিল এই নথি ঠিক কোন মন্ত্রকের আওতায় থাকে। তবে তার সঠিক হদিশ মেলেনি। জানা যায়, দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, ক্যাবিনেট সেক্রেটারিরা মিলে এই ম্যানুয়েল তৈরিতে সাহায্য করেন। আর প্রতিটি বছরে তা আপডেট করা হয়। 

বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলি তো বটেই রাজ্যের প্রতি মুখ্যসচিবের কাছেও এই নথি থাকে। আগুন সংক্রান্ত ড্রিল, মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরানো, সাইরেন সংক্রান্ত বহু তথ্যই এই নথির মধ্যে থাকে। এক তাবড় কূটনীতিক বলছেন,’ এই গুরুত্বপূর্ণ অফিসারদের যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের প্রত্যেকের কী করা উচিত তা বলে দেয়। তাই কোনও বিভ্রান্তি নেই এবং প্রত্যেকেরই স্পষ্ট ধারণা আছে যে কোন প্রোটোকল অনুসরণ করতে হবে।’

এই ম্যানুয়েল বা নথি ‘ওয়ার বুক’ হিসাবে পরিচিত। জানা যাচ্ছে, প্রতি ১৫ বছর অন্তর এর নতুন সংস্করণ বের হয়। শেষবার ২০০৮ সালে মুম্বইতে জঙ্গি হানার পর ২০১০ সালে এটির একটি সংস্করণ আসে। জানা যাচ্ছে, সদ্য মহারাষ্ট্রে শুক্রবার দেবেন্দ্র ফড়নবীশ যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত হাইভোল্টেজ বৈঠক করেছিলেন, সেখানের একটি নোটে মারাঠিতে একটি লাইনে লেখা ছিল,’ কেন্দ্রীয় সরকারের ইউনিয়ন ওয়ার বুক অধ্যয়ন করুন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশাবলী সম্পর্কে অবহিত করুন।’প্রশ্ন উঠতে পারে, ১৫ বছরে একটি সংস্করণ আর প্রতি বছর আপডেট ঘিরে। এক অফিসার বলছেন,’ প্রতি ১৫ বছর অন্তর বইটির একটি আপডেটেড সংস্করণ প্রকাশিত হলেও, প্রতি বছর তিনটি মন্ত্রণালয় নোট পাঠায়। এরপর এগুলো বইতে পেস্ট হয়। প্রযুক্তিগত আপডেটগুলি এর একটি অংশ।’ উল্লেখ্য, পাকিস্তানের সঙ্গে ২০২৫ সালে যে সশস্ত্র সংঘাত হয়েছে ভারতের, তাতে প্রযুক্তির যে দিকটি আগের সংঘাতের থেকে ফারাক গড়েছে এই সংঘাতে। আর এই গোপন নথি আপডেট হতে থাকায়, সেই সংঘাত সংক্রান্ত আধুনিক প্রযুক্তির দিকটিও তাতে বাদ যায়নি। ‘

এক অফিসার বলছেন,’জনসাধারণের জানা উচিত যে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলি জরুরি অবস্থা মোকাবেলায় খুব ভাল। আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে এবং আমরা সবাই জানি কী করতে হবে।’ জানা যাচ্ছে, এই নথিই বলে দেয় আপৎকালে, গোটা দিন ধরে অফিসারদের কাজের শিফ্ট, প্রশাসনিক সংযোগের বিষয়ে। গত কয়েকদিনের আপৎকালে দেশরক্ষায় এই নথিই শীর্ষ অফিসারদের দেখিয়েছে পথ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *