আরব সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন এবং এর সাথে থাকা যুদ্ধজাহাজগুলোতে ড্রোন হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনের হুতি বাহিনী। গোষ্ঠীটির সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এমন দাবি করেছেন। মা’আন নিউজ এজেন্সির বরাতে এ খবর জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।
প্রতিবেদন মতে, বুধবার (৩০ এপ্রিল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি এক ঘোষণায় বলেন, হুতি বাহিনী আরব সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস কার্ল ভিনসন এবং এর সাথে থাকা যুদ্ধজাহাজগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে বেশ কয়েকটি ড্রোন হামলা চালানো হয়।
এই কর্মকর্তা জানান, এক অভিযানে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যানকে এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য করার পরই ইউএসএস কার্ল ভিনসনকে টার্গেট করা হয়। তিনি দাবি করেন, আগের অভিযানের ফলে মার্কিন নৌবাহিনীর একটি এফ/এ-১৮ই সুপার হর্নেট যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়।
গত কয়েকদিনের ধারাবাহিকতায় সোমবার (২৭ এপ্রিল) ভোরে ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় সাদা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী। হামলায় আফ্রিকান অভিবাসীদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ধ্বংস হয়েছে। তাতে অন্তত ৬৮ জন নিহত ও আরও ৪৭ জন আহত হন।

ওইদিন ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে ফিরে এসে বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যানে নামতে গিয়ে যুদ্ধবিমানটি সাগরে পড়ে যায়। তবে পাইলট বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। মার্কিন নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যান বিমানবাহী রণতরীতে অবতরণের সময় যুদ্ধবিমানটি সমুদ্রে পড়ে এবং হারিয়ে যায়। এ ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম।
বুধবার পৃথক এক ঘোষণায় হুতি মুখপাত্র জানান, জাফা শহরে ইসরাইলি দখলদার সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও কৌশলগত স্থানগুলোকে লক্ষ্য করে একটি যৌথ অভিযান চালানো হয়। সেই সঙ্গে তিনি ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হুতির প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার জন্য প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে হুতি সশস্ত্র বাহিনী ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর, আরব সাগর, বাবেল মান্দেব প্রণালী ও এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচলকারী ইসরাইল ও এর মিত্র দেশগুলোর জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে।
প্রায় ১৫ মাসের সংঘাতের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর হুতিরাও হামলা স্থগিত করে। তবে গত মাসে ইসরাইল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করলে হুতিরা আবারও ইসরাইল ও সাগরে পশ্চিমা জাহাজ লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। ইসরাইল ও মার্কিন বাহিনীও ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে আসছে। যাতে দেশটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে বেসামরিক হতাহতের পরিমাণও বাড়ছে।