মালয়েশিয়ায় বিরোধীদের আন্দোলন নিয়ে যা বললেন আনোয়ার ইব্রাহিম

Spread the love

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের পদত্যাগের দাবিতে শনিবার (২৬ জুলাই) বিক্ষোভে উত্তাল ছিল কুয়ালালামপুর। জীবনযাত্রার ব্যয়, বাড়তে থাকা দ্রব্যমূল্য, দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন হাজারো মানুষ। এ বিষয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমালোচনার অধিকারের প্রতি তার অবিচল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শেষে দেশের নিরাপত্তা বাহিনী, অংশগ্রহণকারী জনসাধারণ এবং সকল নাগরিকের উদ্দেশ্যে এক বিশেষ বার্তা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়োর ইব্রাহিম।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া ওই বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা দলের সদস্য, দমকল কর্মী, চিকিৎসা দল এবং স্বেচ্ছাসেবকদের জননিরাপত্তা, শৃঙ্খলা এবং সমাবেশের সুষ্ঠু পরিচালনায় তাদের দক্ষতা, শৃঙ্খলা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

তিনি উপস্থিত জনতাকে, যারা তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন, সংহতি জানিয়েছেন অথবা দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন, তাদের প্রত্যেকের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের শুভকামনা জানিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে তাদের যাত্রা মসৃণ এবং সুরক্ষিত হবে।

গণতান্ত্রিক নীতি, বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমালোচনার অধিকারের প্রতি তার অবিচল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমালোচনা এবং ভিন্নমতকে শত্রুতার চোখে দেখা উচিত নয়। বরং, এটিকে একটি পরিপক্ক, প্রগতিশীল এবং সার্বভৌম জাতির স্পন্দন হিসেবে বিকশিত হতে দেয়া উচিত।

তিনি জোর দিয়েছেন, এই মতপ্রকাশ অবশ্যই সুশৃঙ্খল, নিরাপদ এবং দেশপ্রেমের চেতনায় আবদ্ধ হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সংসদের ‘প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নোত্তর পর্ব’ (পিএমকিউটি) এর উদাহরণ টেনে বলেন, এই প্ল্যাটফর্মে সংসদ সদস্যরা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেকোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে স্বাধীন। তিনি সংসদ সদস্যদের সকল অধিবেশনে, বিশেষ করে পিএমকিউটি সেশনগুলোতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে উৎসাহিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

সকলকে সংলাপ ও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার এবং অভিন্ন ভিত্তি খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়ন শুধুমাত্র রাজপথে নয়, বরং নতুন দিগন্ত অন্বেষণ এবং সেগুলোতে দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমেও সম্ভব। তার মতে, এর মাধ্যমেই দেশ অবিচল ও উদ্যমী গতিতে এগিয়ে যাবে।

ভবিষ্যতে আবারও কুয়ালালামপুরে ফিরে আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, সুলতান আব্দুল সামাদ ভবনসহ রাজধানী কুয়ালালামপুরের ঐতিহাসিক স্থানগুলো একটি ব্যাপক সংরক্ষণ পরিকল্পনার অধীনে রয়েছে। এর লক্ষ্য হলো পর্যটন বৃদ্ধি করা এবং রাজধানীর আশেপাশে ঐতিহাসিক মূল্যবোধ, আশা ও জাতীয় চেতনায় সমৃদ্ধ অর্থনীতিকে সমর্থন করা। বিশেষ করে মালয়েশিয়া ভ্রমণ বছর ২০২৬ উপলক্ষে বিভিন্ন আকর্ষণীয় কার্যক্রমের অপেক্ষায় থাকার কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন।

এদিকে, রোববার (২৭ জুলাই) পুত্রজায়া আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে ফেডারেল টেরিটরিস পিকেআর নেতাদের সাথে সমাবেশে সাংবাদিকদের আনোয়ার বলেন, ‘এটি একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ, তবে আমাদের অবশ্যই স্পষ্টীকরণ প্রদান করতে হবে। দাতারান মেরদেকায় সাক্ষাৎকারের সময় কেউ কেউ দাবি করেছিলেন যে জ্বালানির দাম বেড়েছে, আসলে বাস্তবে তা কমেছে। এরকম অনেক মিথ্যা দাবি রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম জনসাধারণকে সরকারের প্রচেষ্টা এবং নীতিগুলোকে রাজনৈতিক বিদ্বেষ বা অনুভূতির পরিবর্তে তথ্যের ভিত্তিতে বিচার করার জন্য জোর দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সত্ত্বেও, কিছু পক্ষ এখনও ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে, যেমন জ্বালানি ও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মিথ্যা দাবি, যখন বাস্তবে এর বিপরীত চিত্র বিদ্যমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *