মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে গড়ে উঠছে ‘‌নতুন গ্রাম’‌

Spread the love

মহানন্দা নদীর কোলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গড়ে উঠছে ‘‌নতুন গ্রাম’‌। নাম দেওয়া হয়েছে ‘‌তিস্তাপল্লি’‌। কারণ তিস্তা নদীর গ্রাসে দেড়বছর আগে চলে গিয়েছিল লালটং এবং চমকডাঙি গ্রাম। তারপর থেকে গ্রামবাসীদের জীবনে নেমে এসেছিল শুধু হাহাকার। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। সহায়সম্বলহীন হয়ে কোনও রকমে বেঁচে ছিলেন। তবে এবার আশার আলো তাঁরা দেখতে পেলেন। পাঁচদিন আগে ওই দু’টি গ্রামের সব হারানো গ্রামবাসীদের জমির পাট্টা দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর নতুন গ্রাম ‘‌তিস্তাপল্লি’‌ গড়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই এবার গ্রামবাসীরা নয়া গ্রাম গড়তে শুরু করলেন।

এদিকে এই নতুন গ্রাম ‘‌তিস্তাপল্লি’‌ গড়ে উঠলে সেটা একটা পর্যটন কেন্দ্রও হবে। তাই এই গ্রামবাসীদের রুজি–রোজগার বাড়বে। এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পর্যটকরা মোহিত হবেন সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, গ্রামবাসীদের কী সেই আর্থিক অবস্থা আছে?‌ পাহাড়–নদী–জঙ্গল ঘেরা এই গ্রাম। যেখানে হোম স্টে গড়ে উঠলে পর্যটকরা এসে থাকতে পারবেন। আর তাই গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়ালেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তাই আগামী ৬ মাসের মধ্যে গ্রামবাসীদের বাংলার বাড়ি, মিশন নির্মল বাংলা, পথশ্রী–সহ রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প দিতে চান তিনি। আর এভাবেই আদর্শ গ্রাম গড়তে চান মেয়র। এখন গ্রামবাসীরা আনন্দিত।

অন্যদিকে গ্রামবাসীদের এই সহায়তাগুলি মিললে নতুন গ্রাম ‘‌তিস্তাপল্লি’‌ গড়তে তাঁদের খুব একটা সমস্যা হবে না। আর পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হলে আর্থিক শ্রীবৃদ্ধিও ঘটবে। পাহাড়–নদী–জঙ্গল ঘেরা নিরিবিলি গ্রামে বহু পর্যটকই সময় কাটেতে চান। সব একসঙ্গে মেলে না। এখানে সেসব আছে। সিকিমের সেই হরপা বান লালটং এবং চমকডাঙি গ্রামকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। আর ২০২৪ সালের বর্ষায় তিস্তার গর্ভে তলিয়ে যায় দুটি গ্রাম। প্রশাসনের সহায়তায় গ্রামবাসীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই প্রাণে বেঁচে যান সকলে। আর হারিয়ে যায় সবকিছু। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কিছুই ভোলেননি। তাই তো ফুলবাড়িতে প্রশাসনিক সভা করতে এসে তাঁদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেন। আর নিজেই নতুন গ্রামের নামকরণ করেন ‘‌তিস্তাপল্লি’‌।

এই গ্রামটির ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ১৩১টি পরিবারের লোকসংখ্যা প্রায় ৫২৪ জন। আর শিলিগুড়ি থেকে তিস্তাপল্লির দূরত্ব ১৩ কিমি। মহানন্দা নদীর দুটি বাঁধের মাঝখানে তৈরি হচ্ছে নতুন গ্রাম ‘‌তিস্তাপল্লি’‌। পাহাড়, জঙ্গল এবং নদীর পাশে এই নতুন গ্রাম গড়ে উঠছে। সব হারানো গ্রামবাসী মোহন মুখিয়া, জীতেন শৈবরা বলেন, ‘‌তিস্তার গর্ভে ভিটেমাটি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছিলাম। দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারতাম না। দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় পেলাম নতুন ঠিকানা। এখন নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারব।’‌ আর মেয়রের বক্তব্য, ‘‌পাহাড়, জঙ্গল এবং নদীর কোলে এই গ্রাম আগামী কিছুদিনের মধ্যে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রূপ নেবে।’‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *