তামিলনাড়ুর পর এবার মহারাষ্ট্র। দেশে ভাষা প্রতিবাদের পরিধি বাড়ছে। এই আবহে ফের মুম্বইয়ের ভিকরৌলিতে এক দোকানের মালিককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে রাজ ঠাকরের এমএনএস-এর কর্মীদের বিরুদ্ধে।তাঁদের অভিযোগ, মারাঠি সম্প্রদায়কে ‘অপমান’ করেছেন ওই মারওয়াড়ি দোকানের মালিক, তাই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত একটি হোয়াটসঅ্যাপ স্ট্যাটাস পোস্টকে কেন্দ্র করে। ইতিমধ্যে এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভডিওতে দেখা গেছে, এমএনএস কর্মীরা ওই দোকানের মালিককে বাইরে ঘিরে ধরে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ পোস্টের বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। এরপর দলীয় কর্মীরা প্রকাশ্যে মারধর-শারীরিক হেনস্থা করেন ওই ব্যক্তিকে।মহিলারাও মারধরে অংশ নেন। এরপর তাঁকে কান ধরে প্রকাশ্যে গোটা মারাঠি সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, এমএনএস কর্মীরা মারাঠি ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি অসম্মান না করার জন্য অন্যদের সতর্ক করছেন। একইসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের ‘মারাঠি জনগণ’-কে অপমান করে এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে পণ্য না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
চলতি মাসের গোড়াতেই মহারাষ্ট্রের থানে জেলার মিরা ভাইন্দর এলাকায় মারাঠি ভাষায় কথা না বলার জন্য এক খাবারের দোকানের মালিকের উপর হামলা হয়।মিরা ভাইন্দরের ভাইন্দর এলাকায় ৪৮ বছর বয়সী বাবুলাল খিমজি চৌধুরী নামে এক খাবারের দোকানের মালিককে এমএনএস-এর কয়েকজন কর্মী মারাঠি ভাষায় কথা না বলার জন্য চড় মারেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়, এমএনএস-এর প্রতীকযুক্ত স্কার্ফ পরা কয়েকজন ব্যক্তি দোকান মালিকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে তাকে হামলা করছেন।দোকান মালিক যখন বলেন, মহারাষ্ট্রে সব ভাষা বলা হয়, তখন হামলাকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে চড় মারেন এবং দোকান ধ্বংস করার হুমকি দেন। এই ঘটনায় সাতজন এমএনএস কর্মীকে আটক করা হয়। তবে, তাদের পুলিশ নোটিশ প্রদানের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে ভাষা বিতর্কে তোলপাড় মহারাষ্ট্র। মরাঠি ভাষায় কথা বলতে অস্বীকার করায় একের পর এক হামলার ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে।সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকারের সিদ্ধান্ত ছিল, প্রাথমিক স্তরে হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করা হবে। পরে প্রবল বিরোধিতার মুখে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়।তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার। সেই ‘বিজয়’ উপলক্ষে ওরলিতে ‘আওয়াজ মারাঠিচা’ সমাবেশের আয়োজন করেছিল উদ্ধব এবং রাজের দল।