যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু আলোচনায় পূর্ণ সমর্থন আছে: সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Spread the love

সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পরমাণু আলোচনাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করে এবং ইতিবাচক ফলাফলের আশা করে। রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-জিসিসি শীর্ষ সম্মেলনে এ কথা বলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ।

সৌদি আরব সফরকালে বুধবার (১৪ মে) রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্র-জিসিসি শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ট্রাম্প। এতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। এ সময় ইরানের সঙ্গে তার সরকারের পরমাণু আলোচনার কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি চান তিনি। তবে যেকোনো সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে তেহরানকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন বন্ধ করতে হবে।

ট্রাম্পের ভাষণের পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনায় সমর্থনের বিষয়টি জানানো হয়।

ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে বিরত রাখতে অনেক কূটনৈতিক দৌড়ঝাপ ও আলোচনার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ২০১৫ সালে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০১৮ সমালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন ট্রাম্প। ফলে চুক্তিটি অকার্যকর হয়ে যায় এবং ইরানও তার পরমাণু প্রকল্প নতুন করে শুরু করে।

চলতি বছর দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প নিজেই ইরানের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের আহ্বান জানিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে চিঠি দেন। ইরান সরকারও তাতে সাড়া দেয়। তবে তেহরান জানায়, এই আলোচনা হবে পরোক্ষভাবে। ইরানের চাওয়া অনুযায়ী সংলাপে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আছে ওমান।

গত মাসে আলোচনা শুরু হয়। গত রোববার (১১ মে) ওমানের রাজধানী মাস্কাটে চতুর্থ দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর উভয়পক্ষ এই আলোচনাকে ‘ইতিবাচক’ বলে উল্লেখ করেন।

সোমবার (১২ মে) হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘দেখা যাক আমরা ইরান ইস্যুতে কি করতে পারি। তবে এ আলোচনার ফলাফল বেশ ইতিবাচক হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে। তবে কেউ পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারবে না। তবুও এখন পর্যন্ত আলোচনায় তেহরান যৌক্তিকতা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে।’

তবে পরমাণু আলোচনার মধ্যে তেহরানের এক সামরিক অস্ত্র গবেষণাগার ও সংশ্লিষ্ট তিন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। ওই তিন কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের নাম-পরিচয় গোপন রাখলেও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়া এই কর্মকর্তারা ইরানের পরমাণু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ওই তিন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সম্পদ জব্দ করা হয়েছে এবং যতদিন এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং কোনো মার্কিন প্রতিষ্ঠানও তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার আর্থিক চুক্তি করতে পারবে না।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য না করলেও ইউরোপের দেশগুলোকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। ফরাসি ম্যাগাজিনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, যদি ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার ‘স্ন্যাপব্যাক’ পদ্ধতি চালু করে, তাহলে উত্তেজনা এমনভাবে বাড়বে যেখান থেকে আর ফিরে আসা সম্ভব হবে না।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *