যুবতীর উচ্চতা আড়াই ফুট! অন্তঃসত্ত্বার জটিল অস্ত্রোপচার

Spread the love

আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ। আর তারই প্রতিবাদে আন্দোলন চলছে রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে। সেই আন্দোলনের মাঝেই জটিল অস্ত্রোপচার করে সাড়া ফেলে দিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। জন্ম নিল এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিরল অস্ত্রোপচার করে সফল হলেন চিকিৎসকরা। প্রচুর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সুস্থ কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন মা। এই ঘটনা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম বলে জানালেন চিকিৎসকরা।

এদিকে আড়াই ফুট উচ্চতার যুবতীকে কয়েক মাস আগে তাঁর স্বামী কোলে তুলে নিয়ে আসেন হাসপাতালে। তারপর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় নিজের স্ত্রীকে কোলে নিয়ে ছিলেন। চিকিৎসকরা দেখে বেশ অবাক হয়ে যান। তাঁদের ডেকে পৃথকভাবে কথা বলেন চিকিৎসকরা। তারপর হয় পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন যুবতী অন্তঃসত্ত্বা। দম্পতির মুখে হাসি ফুটলেও চিকিৎসকরা চিন্তায় পড়ে যান। কারণ এত কম উচ্চতার ওই যুবতীর কেমন করে সিজার করা যাবে? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

এছাড়া গত মঙ্গলবার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় শিখার। তখন বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে ৬ সদস্যের মেডিক্যাল টিম গঠন করে সিজারের প্রস্তুতি করা হয়। কিন্তু যেহেতু শিখা মাঝির উচ্চতা মাত্র আড়াই ফুট এবং তার নিম্নাংশ কাজ করে না,তাই তাঁর সন্তান প্রসব অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এমনকী কার্ডিয়াক পালমোনারী আরেস্টের ঝুঁকি ছিল। এই বিষয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল হাসপাতালের এমএসভিপি তাপস ঘোষ বলেন, ‘‌যথেষ্ট ঝুঁকির অপারেশন ছিল। চিকিৎসকদের পরিশ্রম সফল। ওই মহিলা হাঁটতে পারেন না। উচ্চতা কম এবং ওজনও কম ছিল। গোটা অপারেশনে একটা টিম কাজ করেছে।’‌

অন্যদিকে যুবতীর স্বামী নিয়ম করে তাঁকে পূর্বস্থলীর জামালপুর থেকে চিকিৎসা করতে বর্ধমানে নিয়ে আসেন। প্রত্যেকবারই তাঁকে তিনি কোলে তুলে আনেন। কয়েক মাস ধরে এই রুটিন চেকআপ চলার পর মঙ্গলবার রাতে চিকিৎসকরা সফল অপারেশন করেন। ওই যুবতী সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সদ্যোজাত এবং মা দু’জনেই সুস্থ আছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। সুস্থ শিশুর জন্ম দেন ডোয়ারফ্রিজম হুইলচেয়ার সিনড্রোমে আক্রান্ত প্রসূতি। শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও নিজের পরিবারের বাধা অতিক্রম করে তিন বছর আগে শিখা মাঝিকে বিয়ে করেন পূর্বস্থলীর বাসিন্দা শক্তি মাঝি। এরপর ২০২৩ সালে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হতেই বর্ধমান মেডিকেল কলেজের প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক কেপি দাসকে দেখান। জটিল বিষয় বুঝতে পেরেই চিকিৎসক কেপি দাস বর্ধমান মেডিকেলে চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *