রাজস্থানে রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হল নদিয়ার বাসিন্দা এক বিএসএফ জওয়ানের। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত জওয়ানের নাম অমিত হালদার। তিনি শান্তিপুর থানার হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গো ভাগা কলোনির বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মৃত্যুর খবর জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। শনিবার রাতে বাড়িতে ফেরে তাঁর কফিন বন্দি দেহ। মৃত জওয়ানের দেহ বাড়িতে ফিরতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। মৃত জওয়ানের স্ত্রীর দাবি, বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। তবে এভাবে বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। তাঁরা ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ বছর আগে বিএসএফের চাকরি পেয়েছিলেন অমিত। প্রথমে কমান্ডার হিসেবে অমিত কৃষ্ণনগরের সীমানাগড়ে ট্রেনিং করেন। এরপর বনগাঁ সেনাবাহিনীর ব্যারাকে পোস্টিং ছিলেন। পরে কাশ্মীরে পোস্টিং হয় তাঁর। বর্তমানে তিনি রাজস্থানে কর্মরত ছিলেন। প্রায় বছর আগে অমিতের বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে তাঁদের ৮ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্ত্রী ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে রাজস্থানে থাকতেন অমিত। তারই মধ্যে বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যুর খবর জানতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। এই খবর পেয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে।
অমিতের স্ত্রী পরিবারের সদস্যদের কাছে গত সপ্তাহের শুক্রবার বিষ খাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, অমিত বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সেখানকার একটি স্থানীয় হাসপাতালে তিনি কয়েকদিন ধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবার রাতেই তাঁর কফিন বন্দি দেহে দেহ বাড়িতে ফিরেছে। পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা সকলে গোটা ঘটনায় শোকস্তব্ধ।

মৃত জওয়ানের পিসি ফুলকুমারী হালদার বলেন, ‘ওরা দুজন ছাড়া আর কেউ থাকত না। কী হয়েছে আমরা জানি না। বৌমা জানিয়েছেন অমিত বিষ খেয়েছে। এখন আমরা সেটাই আমরা জানছি। ওদের মধ্যে কিছু হয়েছে কি না আমরা জানি না।’ এদিকে, অমিতের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। আনন্দ ঘোষ নামে এক প্রতিবেশী জানান, ‘এলাকায় নিঃসন্দেহে ভালো ছেলে ছিলেন অমিত। গ্রামে যতজন আছে ততজনই বলবেন অমিতের কোনও তুলনা নেই। গত কালীপুজোয় বাড়ি ফিরেছিল। আমার অনেকক্ষণ কথা হয়েছিল তাঁর।’ তিনি ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।