আবারও পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু ভিনরাজ্যে। মুম্বইয়ের রেল লাইনের ধারে ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির যুবক মোস্তাফা মিস্ত্রির। বছর আঠারোর তরতাজা সেই শ্রমিকের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবারের দাবি, বাংলায় কথা বলার ‘অপরাধে’ই তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে কফিনবন্দি অবস্থায় মোস্তাফার দেহ পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা গ্রাম।
মোস্তাফা মিস্ত্রি বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি থানার দুর্গামণ্ডপ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে যুবক। প্রায় ছয় মাস আগে জীবিকার সন্ধানে মুম্বই গিয়েছিলেন। স্থানীয়দের দাবি, নির্মাণ সংস্থায় দৈনিক মজুর হিসেবে কাজ করতেন মোস্তাফা। কিন্তু গত দশ দিন ধরে তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। ফোন বন্ধ থাকায় পরিবারের উদ্বেগ বাড়ছিল। এরপরেই আকস্মিকভাবে আসে মৃত্যুসংবাদ। মুম্বইয়ের রেললাইন লাগোয়া এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর দেহ।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মোস্তাফার শরীরে একাধিক ক্ষতের চিহ্ন ছিল। তাঁরা দাবি করেছেন, কাউকে কিছু না জানিয়ে কেউ বা কারা তাঁকে নির্মমভাবে মারধর করে হত্যা করেছে। পরিবারের এক আত্মীয় বলেন, বাংলায় কথা বলার জন্যই ছেলেটাকে খুন করা হয়েছে। কেউ রক্ষা করেনি। শোকার্ত পরিবারের দাবি, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।

খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। মঙ্গলবার দুপুরে সন্দেশখালি গ্রামে পৌঁছয় মোস্তাফার কফিনবন্দি দেহ। চারিদিকে শোকস্তব্ধ পরিবেশ, মাতম ছড়িয়ে পড়ে গ্রামজুড়ে। ঘটনাস্থলে হাজির হন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরাও। পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সন্দেশখালি ২ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ দিলীপ মল্লিক বলেন, এমন ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক।পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।