রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়না রুখতে বারবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। আবেদনকারীদের তিরস্কার করে আদালত বলে, নতুন তথ্য ছাড়া একই বিষয় বারবার মামলা দায়ের করা যায় না। এর আগে গত ৮ মে রোহিঙ্গা বিতাড়না রোখার মামলায় অন্তর্বর্তী স্বস্তি দিতে অস্বীকার করেছিল। এই আবহে ফের শীর্ষ আদালতে মামলা করা হয়েছিল। এই আবহে মামলাকারীর ওপর বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি।
প্রবীণ আইনজীবী কলিন গনসালভেস ৮ মে’র রায় সংশোধনের আবেদন জানিয়ে মামলা করেছিলেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই এই মন্তব্যটি করে সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে গত ৮ মে বিচারপতি সূর্যকান্ত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চ রোহিঙ্গা বিচড়না ইস্যুত অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারি করতে অস্বীকার করে বলে, যেসব রোহিঙ্গা ভারতের নাগরিক নয়, তাদের দেশের কোথাও বসবাসের অধিকার নেই। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তখন বলেছিলেন যে ভারত রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী সম্পর্কিত কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয় এবং ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়ার স্বীকৃতি দিতে পারে না। তিনি আরও বলেন, এই রোহিঙ্গারা মায়ানমার থেকে এসেছে, যেখানে তারা সামরিক অভিযান থেকে বাঁচতে অন্য দেশে পালিয়ে গেছে।

এর আগে শুক্রবার শুনানিতে কলিন গনজালভেস আদালতকে জানান, গত ৮ মে কেন্দ্রীয় সরকার ২৮ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে। তাদের হাতকড়া পরিয়ে আন্দামানে নিয়ে গিয়ে লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে মায়ানমারের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, মৎস্যজীবীদের সহায়তায় কোনও রকমে তাঁরা মায়ানমারে পৌঁছায়। দিল্লিতে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মায়ানমারে পৌঁছানের কথআ ফোন করে জানান তাঁরা। তাঁরা নাকি এও জানান যে তাঁদের জীবন বিপন্ন।
সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য় এই অভিযোগকে ‘বানানো’ এবং ‘সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেওয়া গল্প’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চ বলেছে, ‘এগুলি কেবল দাবি। আপনার কাছে কী প্রমাণ আছে যে এই তথ্যগুলি সত্যি? দেশ যখন একটি গুরুতর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন আপনি এই ধরনের অনুমানমূলক জনস্বার্থ মামলা করতে পারেন না। যতক্ষণ না আবেদনকারীরা কোনও অকাট্য ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ সরবরাহ করছেন, ততক্ষণ আমরা এই মামলায় নতুন কোনও অন্তর্বর্তী আদেশ দিতে পারি না।’