লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ একাধিক প্রকল্পের টাকা ভুয়ো অ্যাকাউন্টে

Spread the love

কলকাতা পুরসভায় ফের বিভিন্ন প্রকল্পে বড়সড় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে, বার্ধক্যভাতা, বিধবাভাতা সহ একাধিক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অর্থ ভুয়ো অ্যাকাউন্টে পাঠানোর খবর সামনে এসেছে। তারপরেই নড়েচড়ে বসেছে পুর প্রশাসন। পুরসভার অন্দরের একাংশ কর্মী এবং কিছু অফিসারের সরাসরি জড়িত থাকার সন্দেহ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতেই বিষয়টি ঘিরে উদ্বেগ বেড়েছে সর্বস্তরে।

সূত্রের খবর, বড়বাজার এলাকার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক শাখায় অন্তত ৫৪টি সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রকৃত উপভোক্তার নাম ব্যবহার করে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। মূল সার্ভারে ঢুকে সেই অ্যাকাউন্টেই টাকা সরানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, একই মোবাইল নম্বরের সঙ্গে একাধিক আধার নম্বর যুক্ত করে তৈরি হয়েছে বহু অ্যাকাউন্ট। এটি স্বাভাবিক প্রযুক্তিগতভাবে সম্ভব নয় বলেই মত আধিকারিকদের। ফলে এর পেছনে অত্যন্ত সুপরিকল্পিত কারিগরি কারসাজি রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যেই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের জবাব চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ঠিক কতজন গ্রাহক এই প্রকল্পে যুক্ত, তাদের আধার যাচাই কতটা সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে কতগুলি অ্যাকাউন্টকে সন্দেহজনক হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

পুরসভার দাবি, প্রাথমিকভাবে যা প্রমাণ মিলেছে, তা নিছক প্রতারণা নয় বরং সার্ভার স্তরে হস্তক্ষেপ করে অ্যাকাউন্ট নম্বর পাল্টে দেওয়া হয়েছে। এটা স্পষ্ট যে একে সংগঠিত হ্যাকিং অপরাধ বলা চলে। এই ঘটনায় ধৃত এক ব্যক্তি একাই ১০টি ভিন্ন ডেবিট কার্ড জোগাড় করেছিল বলেও তদন্তে উঠে এসেছে।

মধ্য কলকাতার মুচিপাড়া, গিরিশ পার্ক-সহ একাধিক থানা এলাকার উপভোক্তা অ্যাকাউন্টেও এই কারচুপির অভিযোগ মিলেছে। পুর কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, শুধুমাত্র একটি ব্যাঙ্ক শাখা নয়, একই ব্যাঙ্কের আরও কয়েকটি শাখা এবং সেখানকার কিছু কর্মীও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। বিষয়টি ঘিরে ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে কেওয়াইসি যাচাই ছাড়া অ্যাকাউন্ট খোলা এবং মোবাইল-আধার অসঙ্গতির বিষয়গুলি নিয়ে। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, দুই বছর আগেও ঠিক এমনই এক প্রকল্প-ভিত্তিক জালিয়াতি চক্র নবান্নের হস্তক্ষেপে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। ফের একই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় প্রশ্ন উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *