বয়স ৮৮ বছর। বয়সের ভারে আগেই ন্যুব্জমান। এবার ছেলের মৃত্যুসংবাদে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছেন অভিশপ্ত বিমানের পাইলট সুমিত সভরওয়ালের বাবা। জানান, ছেলের সঙ্গে যখন শেষবার কথা হয়, তখন তিনি জানিয়েছিলেন, লন্ডনে পৌঁছে আবার ফোন করবেন।
বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে টেক অফের ৩০ সেকেন্ড পরই ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানটি। বিমান সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, যাত্রী এবং ক্রু মেম্বার-সহ ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনই প্রাণ হারান। লন্ডনে আর পৌঁছনো হয়নি সুমিতেরও। দুর্ঘটনার দিন সন্ধেতেই নিহত পাইলটের বাড়িতে ছুটে যায় শিব সেনা বিধায়ক দিলীপ লান্ডে। দেখা করেন তাঁর বাবার সঙ্গে। এরপরই তিনি জানান, শেষবার ফোনে ছেলে বলেছিলেন, লন্ডনে পৌঁছে খবর দেবেন। এখানেই শেষ নয়, সুমিতের বাবার কথায়, “এই ঘটনার দিনতিনেক আগেই ছেলে বলেছিল, ‘এবার চাকরিটা ছেড়ে দেব। তোমার দেখভাল করব।’” ছেলের বলা কথাগুলো বারবার ঘুরেফিরে আসছে স্মৃতিতে। আর কান্নায় ভেঙে পড়ছেন বাবা। বছর দুয়েক আগেই হারিয়েছেন স্ত্রীকে। এবার ছেলেকে হারিয়ে একেবারে একা হয়ে পড়লেন তিনি। শোকস্তব্ধ সুমিতের বোন-সহ বাড়ির অন্য সদস্যরাও।

উল্লেখ্য, আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত। তাঁর সহকারী ছিলেন ক্লাইভ কুন্দার। সুমিত লাইন ট্রেনিং পাইলট। কেরিয়ারে ৮২০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর সহকারী ক্লাইভ ১১০০ ঘণ্টা কাটিয়েছেন কো-পাইলট হিসেবে। দক্ষতার বিচারে এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট উজ্জ্বল। আর সেই কারণেই বোধহয় বিমানটি টেক অফের পরই ইঞ্জিনে গন্ডগোলের আভাস পেয়েই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বা এটিসি-র যোগাযোগ করেন ক্যাপ্টেন সুমিত। পাশাপাশি নিজেও বারবার বিমানটিকে ফের অবতরণ করানোর চেষ্টা করেছিলেন। পরবর্তীতে এটিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিমানটি নিরাপদে অবতরণের বদলে প্রায় ৬০০ ফুট উপর থেকে ভেঙে পড়ে। তাতেই প্রাণ হারান সুমিত।