ইসলামি কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত ২ জিহাদিকে হোয়াইট হাউসের অ্যাডভাইজরি বোর্ড অব লিডারসে নিয়োগ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এদের একজন হলেন ইসমাইল রোয়ার, সে এর আগে রান্ডাল রোয়ার নামে পরিচিত ছিল। অন্যজন হলেন শেখ হামজা ইউসুফ, একজন প্রখ্যাত মুসলিম পণ্ডিত এবং জাইতুনা কলেজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
অভিযোগ, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল ইসমাইল রোয়ারের। ২০০০ সালে পাকিস্তানে লস্কর-ই-তৈবার প্রশিক্ষণ শিবিরে অংশ নিয়েছিল সে। এমনকী কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। সীমান্তে ভারতকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোরও অভিযোগ আছে এই ইসমাইলের বিরুদ্ধে।
এদিকে এই নিয়োগের প্রতিবাদে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ডানপন্থী লারা লুমার। তিনি ইসমাইল রোয়ারের নিয়োগকে ‘পাগলামি’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে রোয়ার লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি) সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল এবং কাশ্মীরে ভারতীয়দের ওপর গুলি চালানোর মতো সন্ত্রাসী কার্যকলাপে অংশ নিয়েছিল। এই নিয়ে লুমার সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘হোয়াইট হাউসে উপদেষ্টা হিসেবে সন্ত্রাসীদের নিয়োগ লজ্জাজনক। এটা আমেরিকার নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তামাশা।’

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০০৪ সালে মার্কিন আদালত ইসমাইল রোয়ারকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। সব মিলিয়ে ১৩ বছর পর্যন্ত কারাগারে ছিল সে। ভার্জিনিয়া জিহাদিস্ট নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এফবিআইয়ের তদন্ত অনুযায়ী, সে পাকিস্তানে লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গি শিবিরে জঙ্গি পাঠাত এবং সেখানে তাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিতে সাহায্য করেছিল। ২০২৩ সালে মিডল ইস্ট ফোরামের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে রোয়ার তার জিহাদি অতীতের কথা স্মরণ করে বলেছিল, ‘আমি লস্করের লোকদের পছন্দ করতাম। আমাকে বলা হয়েছিল যে এটি কোনও চরমপন্থী গোষ্ঠী নয়।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসমাইল রোয়ার আদালতে স্বীকার করেছে যে সে তার সহযোগী মনসুর খান, ইয়ং কি কোয়ান, মহম্মদ আতিক এবং খাজা মেহমুদ হাসানকে পাকিস্তানি জঙ্গি শিবিরে ঢুকতে সাহায্য করেছিল। সে ইব্রাহিম আহমেদ আল-হামদিকে আরপিজি (রকেট চালিত গ্রেনেড) প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানোর জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল। তবে ২০ বছর সে কারাগারে কাটিয়েছে এবং এখন ধর্মীয় স্বাধীনতা ইনস্টিটিউটের ইসলাম ও ধর্মীয় স্বাধীনতা অ্যাকশন দলের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে।