লালবাজারের সেন্ট্রাল লকআপে রাত কাটাতে হলেও ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নিতে নারাজ বলে জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। শুধু তিনি নন, গতকাল কসবা গণধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমে গ্রেফতার হওয়া আরও প্রায় ৩০ জন বিজেপি নেতাও ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলেও তা নিতে অস্বীকার করেছেন বলে দাবি করা হল রিপোর্টে। আজ সকালে লালবাজারের লকআপ থেকে বেরিয়ে এসে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হলে, কেউ ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেবেন না।’
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে গড়িয়াহাট চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ একাধিক বিজেপি নেতাকে। তারপর লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর সারারাত সেখানেই ছিলেন সুকান্তরা। লালবাজার থেকে বেরিয়ে এসে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আমি, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, তমোঘ্ন ঘোষ সহ ৩২ জন নেতা মিলে জামিন প্রত্যাখান আন্দোলন শুরু করলাম। এরপরে পশ্চিমবঙ্গের যেখানেই বিজেপির কর্মকর্তারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হবেন, আমরা জামিন প্রত্যাখান করব। আমরা দেখতে চাই, পুলিশের বেশি ক্ষমতা নাকি বিজেপি কার্যকর্তাদের। পশ্চিমবঙ্গে কত জেল রয়েছে, আমরা দেখতে চাই।’
উল্লেখ্য, শনিবার কলকাতায় প্রতিবাদে নেমেছিলেন বিজেপির নেতা কর্মীরা। তখনই গ্রেফতার হয়েছিলেন সুকান্ত। এই আবহে রাতেই সুকান্ত বলেছিলেন, ‘বারবার আমায় নিয়ে এসে বেলবন্ডে সই করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবার আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি মেয়েদের সঙ্গে যা ঘটেছে তার একটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার। তাই যদি আমায় সারা রাত জেলে থাকতে হয় থাকব।’ আর এরপর সকালে লকআপ থেকে বেরিয়ে তিনি জামিন প্রত্যাখান আন্দোলনের ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, কসবার আইন কলেজে ছাত্রীকে কলেজের মধ্য়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। এর আগে আরি কর কাণ্ডের সময় সেভাবে রাজনৈতিক ভাবে ময়দান কাঁপাতে পারেনি বিজেপি। তবে আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে ফের নারী নির্যাতনের এমন বিভীষিকাময় ঘটনা সামনে আসার পরই তৃণমূলকে চাপে ফেলতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। এহেন পরিস্থিতিতে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিতে চাইছেন সুকান্ত। এদিকে বিধানসভা ভোটের কয়েক মাস আগে নতুন রাজ্য সভাপতি বাছাই নিয়ে জল্পনা চলছে বিজেপির অন্দরে। ঘরে-বাইরের সমীকরণ মিলিয়ে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে চাইছে গেরুয়া শিবির এবং সুকান্ত।