দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাই। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বুধবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। দেশের ৫১ তম প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না স্থলাভিষিক্ত হলেন বিচারপতি গাভাই। সেই সঙ্গে দলিত সম্প্রদায় থেকে দ্বিতীয়বার প্রধান বিচারপতি পেল দেশ। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংরা। আগামী ছ’মাস দেশের বিচারব্যবস্থার শীর্ষপদে থাকবেন তিনি। চলতি বছরের ২৩ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন তিনি।
সাধারণত অবসর গ্রহণের আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে শীর্ষ আদালতের প্রবীণতম বিচারপতির নাম সুপারিশ করেন। সেই প্রথা মেনেই সদ্য প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি খান্না পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসাবে সম্প্রতি বিচারপতি গাভাইয়ের নাম সুপারিশ করেছিলেন। তারপরেই রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি হিসেবে, বিচারপতি গাভাই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রায়ে জড়িত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ২০১৬ সালের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে বৈধ ঘোষণা এবং নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা।
বিচারপতি গাভাই কে ?
১৯৬০ সালের নভেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে জন্মগ্রহণ করেন ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাই। ১৯৮৫ সালের মার্চ মাসে আইনি পেশায় কেরিয়ার শুরু করেন বিচারপতি গাভাই। প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল ও হাই কোর্টের বিচারপতি প্রয়াত ব্যারিস্টার রাজা এস ভোঁসলের সঙ্গে কেরিয়ারের শুরু দিকে কাজ করেন তিনি। শুরুতে নাগপুর ও অমরাবতী পৌর নিগমের স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল হিসাবে কাজ করেছেন। অমরাবতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও জড়িয়ে ছিলেন। তিনি বিদর্ভ অঞ্চলজুড়ে স্থানীয় সংস্থা এবং কাউন্সিলের প্রতিনিধিত্বও করেছিলেন।

১৯৮৭ সালে বোম্বে হাইকোর্টে স্বাধীনভাবে আইনের কাজ শুরু করেন তিনি।১৪ নভেম্বর, ২০০৩ সালে বোম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দায়িত্ব নেন বিচারপতি গাভাই। এবং ২০০৫ সালের ১২ নভেম্বর স্থায়ী বিচারপতি নিযুক্ত হন। তাঁর কার্যকালে, তিনি মুম্বই, নাগপুর, ঔরঙ্গাবাদ এবং পানাজি-সহ একাধিক বেঞ্চে মামলা দেখভাল করেছেন।২৪ মে ২০১৯ সালে তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে উন্নীত করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের একাধিক ঐতিহাসিক মামলার রায়ে যুক্ত ছিলেন বিচারপতি গাভাই। ২০১৬ সালে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্ত বহাল রাখা থেকে নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করার যে রায় আসে, তার অংশ ছিলেন তিনি। সম্প্রতি বুলডোজার শাসন নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দেয়, সেই বেঞ্চেও ছিলেন বিচারপতি গাভাই। রাতারাতি মহিলা, শিশু, বয়স্কদের রাস্তায় এনে দাঁড় করানো নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করা হয় ওই মামলায়।