বউমা শাশুড়ির সম্পর্ক,ঠিক কেমন আপনার কাছে?নিশ্চয়ই একটু ঢোক গিলে উত্তরটা দিতে হচ্ছে। তবে এই সম্পর্কও কিন্তু মা মেয়ের সম্পর্কের মতন হওয়া যায়, সেই মা কিন্তু শাশুড়ি মা নন,মা হলেন বৌমা,আর মেয়ে হলেন শাশুড়ি মা।আজ আপনাদের সামনে সেই দৃষ্টান্তমূলক ঘটনাই তুলে ধরব।অল্প বয়সী বৌমা নিজের লিভার(Liver) দিয়ে প্রাণ বাঁচালেন শাশুড়িকে।আগে কখনও শুনেছেন?না নিশ্চয়ই। আজ্ঞে হ্যাঁ, পুত্রবধূই নিজের দেহের অঙ্গ দিয়ে শাশুড়িকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনলেন।
আর পাঁচজনের মতনই তাদের সংসার।ছেলে ঐক্যতান বিশ্বাস(Aikatan Biswas) দীর্ঘ ১২ বছর দিয়া চক্রবর্তীর(Diya Chakraborty) সাথে প্রেম করে বিয়ে করেছেন।ময়নাগুড়ির বাসিন্দা ঐক্যতান,২০২১ সালে চার হাত এক হয় তাদের।বিয়ের পরই শাশুড়ি মা অসুস্থ হয়ে পড়েন,লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হোন তিনি।ফলে লিভার পরিবর্তন করা ছাড়া কোনও সুযোগ ছিল না ঐক্যতানের মা ডলি বিশ্বাসের(Dali Biswas)।এরপর ঠিক হয় নিজের একমাত্র ছেলেই মাকে লিভার দেবেন,সেই অবস্থায় ঐক্যতানের লিভারেও সমস্যা দেখা যায়। যার কারণে ডাক্তার বলে দেন কোনওভাবেই ছেলে মাকে লিভার দান করতে পারবেন না।এরপরই ছেলের স্ত্রী দিয়া ঠিক করলেন তার লিভার শাশুড়ি মাকে দেবেন।তবে যেহেতু নিজের রক্তের কেউ নন,তাই নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে হয় তাদের।কোনও কোনও মানুষ রটায় দিয়াকে নাকি অত্যাচার করে লিভার দান করতে বাধ্য করছে শ্বশুরবাড়ির লোক।কিন্তু সমস্ত ভুয়ো কথা, আইনি জটিলতা উপেক্ষা করে ২০২৩ সালে ১৯ ঘন্টা ধরে অপারেশন করে নিজের লিভার শাশুড়ি মাকে দিলেন দিয়া।তার ত্যাগ ইতিহাসের পাতায় অবিস্মরণীয়।এমন পদক্ষেপ হয়তো আজ পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ শোনেননি।
দিয়া চক্রবর্তী ছলছল চোখ নিয়ে জানান,তিনি এমন কিছুই করেননি।তার যেটা উচিত বলে মনে হয়েছে সেটাই তিনি করেছেন।তার এই অপারেশনের কারণে ভবিষ্যতে কি হবে, না হবে তা কখনোই ভাবেননি তিনি।তিনি যে নিজের শাশুড়িকে কতটা ভালোবাসেন তা তার চোখ দেখে স্পষ্ট। শাশুড়ি বৌমার এমন রসায়ন সত্যিই ব্যতিক্রম।

যেখানে নিজের মানুষকে বাঁচাতে নিজেদের একটু রক্তটুকু দান করতে চান না সেখানে শাশুড়ির জন্য বৌমার এমন ত্যাগ সত্যিই অভাবনীয়।শাশুড়ি বৌমার ভালোবাসা, শ্রদ্ধা,স্নেহ ঠিক এমন করেই অটুট থাক এই কামনাই রইল।