শাহের সিলমোহরে ক্ষতে প্রলেপ পহেলগাঁওয়ে নিহতের মেয়ের

Spread the love

‘আমরা এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারব।’ সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীনগরে ‘অপারেশন মহাদেব’-এ নিহতেরা পহেলগাঁও কাণ্ডের জঙ্গি নিশ্চিত করতেই মন্তব্য করলেন আশাবরী জাগদালে। কলমা পড়তে না পারার অপরাধে স্ত্রী-মেয়ের চোখের সামনেই সন্তোষ জাগদালেকে গুলি করে মেরেছিল জঙ্গিরা। ‘অপারেশন মহাদেব’-এর পর বাবাকে হারানোর ক্ষততে একটু হলেও যেন প্রলেপ পড়েছে বলে মনে করছেন তাঁর মেয়ে আশাবরী জাগদালে।

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে বৈসরন উপত্যকার হাসিখুশি মুহূর্ত নিমেষে বদলে গিয়েছিল বাঁচতে চাওয়ার আর্তনাদে। সেখানে সেদিন আরও অনেকের সঙ্গে পরিবার-সহ ছিলেন পুণের সন্তোষ জাগদালেও। ওই দিনের ঘটনার পর গোটা পরিবার তছনছ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে মঙ্গলবার সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিশ্চিত করেছেন, পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী তিন জঙ্গিই সোমবার সেনার গুলিতে মারা গিয়েছে। আর এই খবর শুনে সে দিনের নৃশংস ঘটনার কথা মনে করে ভেঙে পড়েন সন্তোষ জাগদালের আশাবরী জাগদালে। বার্তা সংবাদ এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আশাবরী জাগদালে জানান, ‘আমি ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।তারা যেখানেই থাকুক না কেন সেই ২৬ জনের আত্মা শান্তি পাবে। আজ, আমরাও শান্তিতে ঘুমাতে পারব, এবং আমরা আশা করি যে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। দেশে শান্তি বিরাজ করুক। সরকারের উচিত অপারেশন মহাদেবের মতো অভিযান চালানো, যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।’

এদিকে পুনেতে নিহত কৌস্তভ গানবোটের স্ত্রী সঙ্গীতা গানবোটে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর আমাদের বিশ্বাস ছিল যে যারা এই কাজ করেছে তাদের ধরা হবে এবং হত্যা করা হবে। তাদের হত্যা করা হয়েছে; এটা ভালো খবর। আমি সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।’ পহেলগাঁওয়ে সেই ভয়াবহ হামলায় মোট ২৬ জন প্রাণ হারান, যাঁদের মধ্যে ছ’জন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে সন্তোষ জগদালের পাশাপাশি অতুল মানে, সঞ্জয় লেলে, হেমন্ত জোশী, কৌস্তভ গানবোটে এবং দিলীপ দোসালেও ছিলেন।এমন একটা ঘটনা একলহমায় তছনছ করে দিয়েছিল সবটুকু।

‘অপারেশন মহাদেব’

সংসদের অপারেশন সিঁদুর নিয়ে বিশেষ আলোচনার শুরুর দিনেই শ্রীনগরের কাছে অপারেশন মহাদেবে পহেলগাঁওকাণ্ডের মূল পান্ডা-সহ ৩ জঙ্গিকে খতম করার সাফল্য মঙ্গলবার লোকসভায় তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অপারেশন মহাদেবে মৃত তিনজনেই যে পাকিস্তানি জঙ্গি তার প্রমাণ দিয়ে বলেন, সুলেমান, আফগান ও জিবরানকে যারা খাদ্য-রসদ দিয়ে সাহায্য করেছিল, তাদের আগেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। তিন মৃতদেহ শ্রীনগরে নিয়ে আসার পর তারাই দেহগুলি শনাক্ত করে।তিনি প্রমাণ দিয়ে বলেন, জঙ্গিদের সাহায্যকারী ছাড়াও যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও শনাক্ত করেছেন। শুধু তাই নয়, এনকাউন্টারে তারা যে গুলি চালিয়েছিল তার ফরেনসিক রিপোর্টও বলছে, এরাই বৈসরনে গুলি চালিয়েছিল।

লোকসভায় অধিবেশনে বক্তব্য রাখার সময় অমিত শাহ বলেন, কেন্দ্র সুনির্দিষ্ট প্রমাণ জোগাড় করেছে, যা নিশ্চিত করে যে জঙ্গিরা পাকিস্তান থেকে এসেছে। তিনি আরও জানান, প্রমাণপত্রের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানি ভোটার আইডি নম্বর এবং নিহত জঙ্গিদের কাছে পাওয়া পাকিস্তানে তৈরি চকোলেটের মোড়ক।বিতর্কে অংশ নিয়ে শাহ এদিন কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের কথার সমালোচনা করেন। চিদম্বরম পহেলগাঁও হত্যার সঙ্গে পাকিস্তানের যোগসাজশের প্রমাণ চেযেছিলেন। তার জবাবে শাহ বলেন, তাঁর এই মন্তব্যই পাকিস্তানকে আড়াল করার চেষ্টা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *