ভারত ও যুক্তরাজ্য মঙ্গলবার একটি বিস্তৃত বাণিজ্য চুক্তি ঘোষণা করেছে যা বেশিরভাগ পণ্য ও পরিষেবার উপর শুল্ক অপসারণ করবে, যা নয়াদিল্লি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ অন্যান্য দেশের মধ্যে অনুরূপ চুক্তির পূর্বসূরী হিসেবে কাজ করতে পারে। এই মুক্তি বাণিজ্য চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক টুইট বার্তায় চুক্তিটি ঘোষণা করেছেন। এই চুক্তিকে একটি ‘ঐতিহাসিক মাইলস্টোন’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী, তাঁর এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, যে তিনি শীঘ্রই ভারতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সাথে দেখা করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষারত।
প্রসঙ্গত, ৯ মাস ধরে স্থগিত থাকার পর শেষমেশ ভারত ও ইউকের মধ্যে তাবড় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিটি এল। এই সম্পর্কিত আলোচনার সমাপ্তি ২৯ এপ্রিলেই ঘোষিত হয়ে যাবে এমনটা ভেবেছিল দুই দেশের সংশ্লিষ্ট পক্ষই। তবে শেষ মুহূর্তে আলোচনার সময়সীমা বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, এপ্রিলের শুরুতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন তাঁর পারস্পরিক শুল্ক (যা বর্তমানে ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রয়েছে) আরোপের চার্ট। ভারত সহ বহু দেশের ওপর তিনি শুল্কের কোপ বসান। তার ফলে বিশ্ব জুড়ে বাণিজ্যে তাবড় প্রভাব পড়ে। সেই আবহে ভারত ও ইউকের মধ্যে এই মুক্ত বাণিজ্যের চুক্তি একটি বড় পদক্ষেপ।
এছাড়াও বর্তমানে, পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের যে খতিয়ান দেখা যাচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে দিল্লি- ব্রিটেনের মধ্যে সম্পর্কে এই তাবড় বাণিজ্য চুক্তি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, রিপোর্ট বলছে, আমেরিকা সহ বহু দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে আলোচনায় রয়েছে দিল্লি। ইউকের সঙ্গে ভারতের এই মুক্ত বাণিজ্যের আলোচনা গত ১৩ জানুয়ারি ২০২১ সাল থেকে চলছে। সেই সময় ব্রিটেনের তখতে ছিলেন বরিস জনসন। এরপর প্রথমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হন কোনও ভারতীয় বংশেদ্ভূত। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন ঋষি সুনাক। সেই আমলেও চুক্তি চূড়ান্ত রূপ পায়নি। শেষে স্টারমারের আমলে দিল্লি-ব্রিটেনের মধ্যে এই তাবড় চুক্তি হল। চুক্তি নিয়ে তাঁর এক্স পোস্টে নরেন্দ্র মোদী লেখেন,’ আমার বন্ধু প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের সাথে কথা বলতে পেরে আনন্দিত। একটি ঐতিহাসিক মাইলফলকে, ভারত এবং যুক্তরাজ্য সফলভাবে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি একটি দ্বিগুণ অবদান কনভেনশন সম্পন্ন করেছে।’ মোদী এরই সঙ্গে লেখেন,’এই যুগান্তকারী চুক্তিগুলি আমাদের ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করবে এবং আমাদের উভয় অর্থনীতিতে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং উদ্ভাবনকে অনুঘটক করবে। আমি শীঘ্রই ভারতে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’ জানা যাচ্ছে চুক্তিতে বিলম্বের কারণগুলি মূলত বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত-আইনি বিষয়গুলির সাথে জড়িত ছিল।