‘শোক দেখাতে আসবেন না’

Spread the love

নদিয়ার কালীগঞ্জে ভোট-পরবর্তী হিংসায় মৃত্যু হয়েছে এক নাবালিকার। বছর দশেকের তামান্না খাতুন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। কিন্তু, তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমায় তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েকদিন, কিন্তু পরিবার এখনও শোকের ভার সামলাতে পারছে না। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে এখনও মূহ্যমান তামান্নার বাবা মা। এই অবস্থায় তৃণমূলের দেওয়া ক্ষতিপূরণ ফিরিয়ে দিলেন তামান্নার বাবা মা। 

মঙ্গলবার সকালে তামান্নার বাড়িতে পৌঁছন ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তাঁর হাতে ছিল একটি খয়েরি খাম। ভিতরে ছিল কিছু অর্থ সহায়তা ও একটি চিরকুটে লেখা তাঁর ফোন নম্বর। তিনি শিশুটির মাকে বলেন, যদি কোনো অসুবিধা হয়, তাহলে তাঁকে জানাতে। কিন্তু বিধায়ক সাহায্য দিতে চাইলেও তা ফিরিয়ে দেন তামান্নার মা। কথাও বেশি বলতে পারেননি। কান্নায় গলা রুদ্ধ হয়ে যায়। কাঁদতে কাঁদতেই বলে ওঠেন, ‘এই টাকাটা দিয়ে কী হবে? আমি আর পারছি না…। এই শোক দেখাতে আসবেন না।’ পাশে থাকা এক আত্মীয়া বলেন, ওর আর কে আছে টাকা নেবে?

বিধায়ক বোঝাতে চান, তিনি এখানে কোনও রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে আসেননি। তিনি বলেন, একটি অরাজনৈতিক সংগঠনের তরফে তিনি এসেছেন। তাই তাঁকে যেন ভুল না বোঝা হয়। কিন্তু, তবু পরিবার তাঁদের অবস্থানে অনড়। সাহায্য নিতে একেবারেই নারাজ তারা। তামান্নার মা পরে তৃণমূল বিধায়ক আলিফা আহমেদের দিকে আঙুল তুলে বলেন, যে মেয়েটা ভোট চাইতে এসেছিল, সে একবারও আসেনি। আর এখন সাহায্য নিয়ে কী হবে। এই ঘটনা ঘিরে এলাকাজুড়ে চাপে রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, কার হাতে বোমা থাকবে, তা দেখে বিচার হওয়া উচিত নয়। যেই হোক, এমন কাজ মেনে নেওয়া যায় না। যারা এই কাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৫ জনকে। এছাড়াও, আরও বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে এফআইআরে। তাদের এখনও গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ। এমন অবস্থায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন তামান্নার বাবা-মা। তারা পুলিশের উপরে ভরসা রাখতে পারছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *