সন্তানকে নদীতে ভাসিয়ে দিলেন মা

Spread the love

দু’সপ্তাহ ধরে স্বামীর হাতে কাজ নেই। ঘরে নেই এক ফোঁটা দুধ। খিদের জ্বালায় সকাল থেকে কেঁদেই চলেছে দেড় বছরের ছেলেটা। সন্তানের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তাকে নদীতে ভাসিয়ে দিলেন মা। কোনও প্রান্তিক রাজ্য নয়, এই ঘটনা খাস পশ্চিমবঙ্গের। যেখানকার মুখ্যমন্ত্রী মাঝে মাঝেই দাবি করেন, গরিব মানুষের কল্যাণে প্রায় ১০০টি প্রকল্প চালাচ্ছে তাঁর সরকার।

ঘটনা জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ব্লকের মরিচবাড়ির তিস্তা সেতু এলাকার। জানা গিয়েছে, সেখানকার বাসিন্দা বিপুল বাওয়ালি পেশায় সূত্রধর। বাড়িতে স্ত্রী সীমা ছাড়াও রয়েছে তিন বছরের মেয়ে ও দেড় বছরের ছেলে। সোমবার সকালে বিপুলবাবু বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলে ছেলেকে নিয়ে তিস্তার পাশে যান মা। এর পর দেড় বছরের পুত্রসন্তানকে নদীতে ভাসিয়ে দেন তিনি। ঘটনাস্থলের আসেপেশেই ছিল নবম শ্রেণিতে পাঠরত ২ নাবালিকা। তাঁরা জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেন। এর পর মাকে আটক করে গ্রামে নিয়ে আসেন তাঁরা।

গ্রামবাসীদের জেরার মুখে সীমাদেবী জানান, গত ২ সপ্তাহ ধরে স্বামী বিপুলবাবুর হাতে কোনও কাজ নেই। যার জেরে সংসারে চরম অনটন চলছে। ঘরে এক দানা চাল নেই, এক ফোঁটা দুধ নেই। ওদিকে সকাল থেকে দেড় বছরের ছেলেটা কেঁদেই চলেছে। সন্তানের এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তাকে জলে ভাসিয়ে দিতে গিয়েছিলেন তিনি।

যদিও বিপুলবাবুর দাবি, স্ত্রীর সঙ্গে এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। ২ সন্তানকে রেখে তার সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন স্ত্রী। সালিশি সভা ডেকে তাঁকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু বিপুলবাবুর সঙ্গে সংসার করতে রাজি ছিলেন না তিনি।

এই ঘটনায় স্থানীয় ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিনামূল্যে রেশনসহ রাজ্য সরকারের এত প্রকল্প থাকলেও কেন পরিবারটিকে অনাহারে থাকতে হচ্ছে প্রশ্ন উঠছে তা নিয়ে। খবর পেয়ে বিডিও অফিসের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সীমাদেবীর সঙ্গে কথা বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *