সরকারি দফতরের মধ্যেই হেনস্তার শিকার হলেন সরকারি আধিকারিক। এখানেই শেষ নয়। নিজের দফতর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করা হয় তাঁকে। এরপর প্রকাশ্যে আধিকারিককে মারধোর করা হয় মাটিতে ফেলে।কিল, চড়, ঘুষি, লাথি বাদ যায়নি কিছুই। এমন ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিজেপি শাসিত ওড়িশার ভুবনেশ্বর পুরসভায়। এক্স হ্যান্ডেলে ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করে প্রশাসনকে নিশানা করেছেন ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ের। এদিকে, সরকারি আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে ভুবনেশ্বর পুরসভায় জনগনের সমস্যা শোনার এবং প্রতিকারের কাজ চলছিল। তার মাঝেই আচমকা ঢুকে পড়েন কয়েকজন।এরপরই পুরসভরা অ্যাডিশনাল কমিশনার রত্নাকর সাহুকে হেনস্তা করতে শুরু করেন তাঁরা। দফতর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করা হয় রত্নাকর সাহুকে। মাটিতে ফেলে ক্রমাগত মারধোর করা হয়।ওই সরকারি আধিকারিকের অভিযোগ, প্রথমে তাঁকে বলা হয় তিনি কেন ‘জগ ভাই’(বিজেপি নেতা জগন্নাথ প্রধান)-এর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। সেই অভিযোগ অস্বীকার করলে তাঁকে হেনস্তা করতে শুরু করে অভিযুক্তরা। এমনকী মারতে মারতে ওই সরকারি আধিকারিককে একটি গাড়িতে তোলার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। যা দেখা গিয়েছে নবীন পট্টনায়েকের শেয়ার করা ভিডিওতেও।
এক্স পোস্টে বিজু জনতা দলের প্রধান তথা ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক লিখেছেন, ‘নিজের অফিসেই একজন সিনিয়র সরকারি আধিকারিক হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। তাহলে রাজ্যের সাধারণ মানুষের সুরক্ষা কোথায়?’ এই ঘটনায় উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।এদিকে, পুরসভার মধ্যে এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মেয়র সুলোচনা দাস। সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে এমন ব্যবহারের পর সোমবারই প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।এরপরেই জীবন রাউত, রেশমী মহাপাত্র এবং দেবাশীস প্রধান নামের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এদিকে, ভুবনেশ্বরে প্রকাশ্য দিবালোকে একজন ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে এই ‘লজ্জাজনক’ আচরণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন পুরসভার কর্মী এবং বিরোধী বিজু জনতা দলের সদস্যরা।পাশাপাশি ওড়িশা অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ওএএস) এই হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার থেকে গণছুটি ঘোষণা করেছে।