সরকারি হাসপাতালের খাবারে টিকটিকি! ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগরের বড় রাঙ্কুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। এমন অস্বাভাবিক ঘটনায় প্রশ্নের মুখে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। অভিযোগ, রোগীর তরকারিতে সিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে একটি আস্ত টিকটিকি। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে ভুগছেন অন্যান্য রোগীরা। হাসপাতালে দেওয়া খাবার খেতে চাচ্ছেন না অনেকেই।
জানা গিয়েছে, এই ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে। বিশ্বনাথপুরের বাসিন্দা পূর্ণিমা হাজরাবেরা নামের এক রোগী খাদ্যে বিষক্রিয়াজনিত সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁকে রাতের খাবার হিসেবে পরিবেশন করা হয় ভাত ও তরকারি। সেই তরকারির পাত্রেই ভেসে ওঠে সিদ্ধ হয়ে যাওয়া টিকটিকি। মুখে খাবার দেওয়ার আগেই বিষয়টি তাঁর নজরে আসে। সঙ্গে সঙ্গে নার্সদের জানান তিনি। উপস্থিত হন রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাও।
রোগীর অভিযোগ, ঘটনার গুরুত্ব বুঝে সতর্ক হওয়ার বদলে প্রথমেই বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তরকারি থেকে টিকটিকি সরিয়ে ফেলে তাঁকে বলা হয়, এটা নিয়ে চিৎকার করবেন না, কাউকে কিছু বলার দরকার নেই। তাঁকে অন্য তরকারি দেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। এরপর বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুরো ওয়ার্ডে। শুরু হয় উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থা।
এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগের দায় নিতে নারাজ। তাঁদের দাবি, খাবার প্রস্তুতির সময় নয় বরং দেওয়াল থেকে টিকটিকি পরে তরকারির পাত্রে এসে পড়েছে পরিবেশনের ঠিক আগে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, হাসপাতালের মতো সংবেদনশীল পরিবেশে এমন গাফিলতির সুযোগ কীভাবে তৈরি হয়? কোনও নজরদারি নেই? নেই খাবার পরিবেশনের আগে মান নিয়ন্ত্রণ?

এই প্রশ্নের মুখেই এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডিউটিতে থাকা চিকিৎসক শ্রীবাস সরকার জানিয়েছেন, তাঁর কানে ঘটনাটি এসেছে ঠিকই, কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ জানাননি। তবে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। নন্দীগ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিতকুমার দেওয়ান জানিয়েছেন, বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। রান্নার দায়িত্বে থাকা গোষ্ঠীর কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয় বলেই মত প্রশাসনের।