রাজ্যে আক্রান্ত খোদ প্রাক্তন মন্ত্রী। সল্টলেকে নিজের বাড়ির সামনেই হামলার মুখে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও হাবড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। অভিযোগ, এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি আচমকাই তাঁর মুখে ঘুষি মেরে দেন। পেটে পাঁজরের নিচেও আঘাত করেন, সেই ধাক্কায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তৃণমূল বিধায়ক। পরে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে। আর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে।
সূত্রের খবর, রবিবার হাবড়া থেকে সল্টলেকের বাড়িতে ফেরেন ‘বালু’ নামে পরিচিত জ্যোতিপ্রিয়। বাড়ির নিচতলায় তাঁর অফিসও রয়েছে। অভিযোগ, সেই দফতরে ঢোকার মুহূর্তেই আচমকা এক যুবক তাঁর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মুখে ঘুষি মারে, পেটে পাঁজরের নিচেও আঘাত করেন। জোর ধাক্কায় বিধায়ক রাস্তায় পড়ে যান। প্রাক্তন মন্ত্রীর চিৎকার শুনে দফতরের কর্মীরা ছুটে এসে তাঁকে তুলে দেন এবং অভিযুক্তকে আটকে রাখেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ যুবককে গ্রেফতার করে। তৃণমূল সূত্রে খবর, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে আঘাত করতে আগন্তুক এতটাই উদ্যত ছিলেন যে, তাঁকে তিন-চার জন মিলেও ঠেকাতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত কোনও রকমে যুবককে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, প্রাক্তন মন্ত্রীর মুখে, পেটে আঘাত লেগেছে। তবে তিনি আপাতত সুস্থ রয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। তবে গোটা ঘটনাটি তাঁকে প্রবলভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে। বিধায়ক ডায়াবেটিক, ফলে আচমকা হামলায় তিনি এখনও মানসিক ভাবে সামলে উঠতে পারেননি। তিনি কিছুটা ভয়ও পেয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠদের দাবি।

অভিযুক্ত যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করার পর তাঁর ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছেন বিধায়ক নিজে। ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, ওই যুবককে কোনওদিন দেখেননি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দেখা যায়, দুপুর তিনটে থেকেই বাড়ির সামনে ঘোরাফেরা করছিলেন ওই ব্যক্তি। মাঝেমধ্যে সরে গেলেও পরে আবার ফিরে আসেন এবং জ্যোতিপ্রিয় পৌঁছনোর পরই হামলা চালান। কিন্তু কী কারণে তিনি হামলা চালিয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ ব্যাপারে পুলিশের তরফেও এখনও কিছু জানানো হয়নি। ইতিমধ্যে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে রেশন কেলেঙ্কারির মামলায় ইডি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে গ্রেফতার করেছিল। প্রায় ১৪ মাস জেলবন্দি থাকার পর চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি তিনি জামিনে মুক্তি পান। গ্রেফতার হওয়ার পরেও দীর্ঘ দিন মন্ত্রিত্বে ছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।