সাইবার অপরাধ! ভুয়ো খবরে লাগাম টানতে শাহকে চিঠি মমতার

Spread the love

দেশ জুড়ে ডিজিটাল অপরাধের দ্রুত বাড়বাড়ন্ত ও সমাজমাধ্যমে মিথ্যে খবর ছড়ানোর প্রবণতা বাড়ছে। এই প্রবণতা রুখতে কেন্দ্রকে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এক বিস্তারিত চিঠিতে তিনি এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। চিঠিতে তিনি বলেছেন, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ভুয়ো ভিডিয়ো ও প্ররোচনামূলক বার্তা সমাজে বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা সৃষ্টি করছে, যা সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, শুধুমাত্র তথ্য বিকৃতি বা গুজব ছড়ানোই নয়, সাইবার অপরাধ এখন এক ভয়ানক সামাজিক সমস্যার রূপ নিচ্ছে। বহু মানুষ প্রতারণার শিকার হয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অপরাধীরা ভুয়ো পরিচয়ে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। কখনও বা ছবি ও পরিচয়পত্রের অপব্যবহার করে মানুষকে হেনস্থা করা হচ্ছে। এই ধরনের অপরাধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সমাজের দুর্বল অংশের মানুষ। বিশেষ করে মহিলারা, শিশুরা, প্রবীণরা এবং নিম্নআয়ের পরিবারগুলি। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যে খবর ও বিকৃত ভিডিয়ো ছড়িয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, মানুষের মধ্যে সন্দেহ, বিদ্বেষ ও আগ্রাসী মনোভাব বাড়ছে। এই অবস্থা রুখতে দ্রুত এবং কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেছেন তিনি।

এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবও রেখেছেন। তার মধ্যে রয়েছে বিদ্বেষমূলক প্রচার ও সাইবার অপরাধ ঠেকাতে আরও শক্তিশালী ও আধুনিক আইন প্রণয়ন, সাইবার নিরাপত্তা পরিকাঠামোকে উন্নত করা, সাধারণ নাগরিকদের জন্য ডিজিটাল সচেতনতা ও শিক্ষা সম্প্রসারণ এবং ভুয়ো খবর চিহ্নিত করতে আলাদা টাস্ক ফোর্স গঠন।

চিঠির শেষ অংশে মুখ্যমন্ত্রী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, সাধারণ মানুষ যাতে সহজেই সাইবার অপরাধের অভিযোগ জানাতে পারেন, তার জন্য একটি সরল ও কার্যকর রিপোর্টিং সিস্টেম চালু করা প্রয়োজন। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা জানেন না কোথায় অভিযোগ জানাতে হবে বা কীভাবে প্রযুক্তিগত প্রতারণার বিরুদ্ধে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *