সাপে কামড়ালো কিশোরকে!

Spread the love

এক কিশোর মনের আনন্দে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। এই খেলায় সে এতই ব্যস্ত ছিল যে তাকে সাপে কামড়েছে এই কথাটাই ভুলে গেল। এমনও যে হতে পারে সেটা এই ঘটনা না ঘটলে কেউ বিশ্বাসই করত না। সাপে কামড়েছে এই কথা কাউকে ওই কিশোর বলেওনি। আবার নিজে যে চিকিৎসকের কাছে যাবে সেটাও ভুলে গেল। আর তার ফলে সময়মতো চিকিৎসা হল না। তার জেরে মৃত্যু হল ১৩ বছরের ওই কিশোরের। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানার বাবলাবোনা গ্রামে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পুলিশ কিশোরের দেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, গতকাল বাবলাবোনা গ্রামের বাসিন্দা মোমিন শেখ কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে গ্রামেরই একটি রাস্তার ধারে কলাগাছের নিচে বসে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিল। আর সেই খেলায় প্রত্যেকে এত মত্ত ছিল যে, কোনও দিকে তারা তাকিয়ে দেখছিল না। কারও ডাকে সাড়া পর্যন্ত দিচ্ছিল না। শুধু মাঝেমধ্যে হাসির কলরব ভেসে আসছিল। আসলে সাফল্যের প্রতিক্রিয়া। তখন মোমিন এবং তার বন্ধুরা মোবাইল ফোনে গেমের প্রতি এতটাই মগ্ন ছিল যে ঝোপ থেকে সাপ বেরিয়ে এসে মোমিনের পায়ে কামড়েছে সেটাই কেউ খেয়াল করেনি।

গ্রামবাসীদের সূত্রে খবর, বিষধর সাপ কামড়ে চলে গেলেও মোমিন শেখ নিজেও সেটা একদম বুঝতে পারেনি। বরং খেলার নেশায় মত্ত হয়ে কামড়ের জায়গায় কয়েকবার হাত বুলিয়ে সে আবার গেম খেলায় মেতে ওঠে। এভাবে প্রায় ৫ ঘন্টা কেটে যায়। আর তার পরই সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে কিশোর মোমিন শেখ। তারপর অচৈতন্য হয়ে পড়ে একটা সময় পর। তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে।

এই ঘটনায় মোমিন শেখের পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। আল্লারাখা শেখ মৃতের এক আত্মীয় বলেন, ‘‌গ্রামের রাস্তায় কলাগাছের তলায় বসে মোবাইল গেম খেলার সময়ই সাপে কামড় দিয়েছে। মোমিন বেশ কিছুক্ষণ পর অসুস্থবোধ করতে শুরু করার পর দৌড়ে বাড়ি চলে আসে। আর পায়ে অসহ্য জ্বালা করতে থাকে। আর সংজ্ঞা হারায় মোমিন। এমনকী মোমিনের মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বের হতে শুরু করে।’‌ এই মোমিনের বাবা মনিরুল শেখ–সহ পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই কেরলে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। পরিবারের সদস্যরা মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *