সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার (মোহাম্মদ আল জোলানি) সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণার একদিন পর বুধবার (১৪ মে) সৌদি রাজধানী রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের উপস্থিতিতে দুই নেতার মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এটা ট্রাম্পের সঙ্গে আল-শারার প্রথম কোনো বৈঠক।
মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) সৌদি আরব যান ট্রাম্প। এরপর রিয়াদে এক বক্তৃতাকালে ট্রাম্প জানান, দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অংশ হিসেবে সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে। গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের প্রায় ছয় মাসের মাথায় এই পরিকল্পনার কথা জানালেন ট্রাম্প।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, গত ২৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো সিরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরাসরি সাক্ষাতের ঘটনা। সেদিক থেকে এটা ঐতিহাসিক। বৈঠকটি ৩৩ মিনিট স্থায়ী হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও।
বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছিল, তা নিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প আল-শারাকে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর প্রত্যাবর্তন রোধে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে আল-শারা বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের সাথে একমত। সিরিয়া থেকে ইরানিদের সরে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এটা একটা সুযোগ এবং ‘সন্ত্রাসবাদ’-এর বিরুদ্ধে লড়াই এবং রাসায়নিক অস্ত্র নির্মূলে ওয়াশিংটনের সাথে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে কাজ করবে দামেস্ক।
ট্রাম্প আল-শারাকে সিরিয়া থেকে ‘ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী’ নির্মূল করার অনুরোধ করেছেন। আরও বলেছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে সমস্ত বিদেশি ‘সন্ত্রাসীদের’ নির্মূল করতে হবে। হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ট্রাম্প শারাকে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বানও জানিয়েছেন।
বৈঠকে এরদোয়ান ও বিন সালমান সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের মার্কিন পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক বলে প্রশংসা করেন।
আল জাজিরার সিরিয়া প্রতিবেদক ইমরান খান বলেন, বৈঠকটি বিশেষ করে সিরিয়ার অভ্যন্তরে নিরাপত্তার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সিরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভবিষ্যতের সম্পর্ক কেমন হবে তার নকশার মতোও দেখাচ্ছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠকের পর জিসিসি-ইউএস সম্মেলনে যোগ দেন ট্রাম্প। সেখানেও সিরিয়া বিষয়ে কথা বলেন তিনি। জানান, ওয়াশিংটন দামেস্কের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনা যাচাই করছে।