সীমানা স্তম্ভ উপড়ে জাতীয় সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ করলেন কৃষকরা

Spread the love

যেখানে জমির বাজারদর কাঠা প্রতি ৯ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, সেখানে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে প্রতি বিঘায় (২০ কাঠায় ১ বিঘা) মাত্র ৮ লক্ষ টাকা! বাজারদরের সঙ্গে এই মূল্যের ফারাক বিরাট। তাই, আগেই ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে সরব হয়েছিলেন কৃষকরা। কিন্তু, প্রশাসন তা কানে তোলেনি বলে অভিযোগ। এবার তাই পথে নেমেই রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিলেন জমিদাতা কৃষকরা। স্তব্ধ হয়ে গেল জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ।

বুধবার (২১ মে,২০২৫) এই ঘটনা ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বোয়াইচণ্ডী এলাকায়। এই এলাকা দিয়েই এগিয়ে যাবে ১১৬এ নম্বর জাতীয় সড়ক। তার জন্যই কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু, জমি হারানো কৃষকরা নামমাত্র ক্ষতিপূরণে খুশি নন। তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা কেউই উন্নয়ন বা সড়ক সম্প্রসারণের বিরোধী নন। কিন্তু, যে জমিতে চাষ করে তাঁদের সংসার চলে, প্রশাসন যদি উন্নয়নের নামে সেই জমি নামমাত্র দামে তাঁদের কাছে নিয়ে নেয়, তাহলে তাঁদের চলবে কীভাবে?

‘কৃষক ঐক্য মঞ্চ’ তৈরি করে সরকার তথা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করছেন জমিহারা চাষিরা। তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৯৫৬ সালের আইনে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু, তাঁরা ২০১৩ সালের অধিগ্রহণ আইনের সংশোধনী অনুসারে ন্য়ায্য ক্ষতিপূরণ চাইছেন।

এই প্রেক্ষাপটে জমিদাতাদের সঙ্গে কোনও প্রকার আলোচনা না করে, তাঁদের চাপ দিয়ে, একতরফা নোটিশ জারি কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। জমিদাতা কৃষকদের সাফ কথা, তারা এসব হতে দেবেন না। প্রশাসনকে আগে আলোচনায় বসতে হবে, ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তবেই জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ ফের শুরু করতে দেওয়া হবে।

যদি প্রশাসন কৃষকদের দাবি না মানে, তাহলে আগামী দিনে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে মামলা লড়তেও তাঁরা রাজি বলে জানিয়েছেন জমিদাতারা। জমি অধিগ্রহণে নিশান হিসাবে ইতিমধ্য়ে যে সীমানা স্তম্ভগুলি তৈরি করা হয়েছিল, বুধবার সেগুলি উপড়ে দেন আন্দোলনকারী কৃষকরা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ আরও উন্নত করতেই এই জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *