আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) জানিয়েছে, তারা পশ্চিম সুদানের এল ফাশার শহরে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অন্যান্য নৃশংসতার প্রতিবেদন সম্পর্কিত তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের জন্য কাজ শুরু করেছে। আরএসএফের বর্বর হামলা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আইসিসি।
তীব্র মানবিক সংকটে সুদান। দেশটির সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর ক্ষমতার দ্বন্দ্বে বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে আরএসএফ।
স্থানীয় সময় সোমবারও সুদানের উত্তর করদোফানে গোষ্ঠীটির ড্রোন হামলায় প্রাণ হারান ৪০ বেসামরিক নাগরিক। এর ফলে গত এক সপ্তাহে অন্তত ২ হাজারের মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে আরএসএফকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তার অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পণ্য বয়কটের ডাক দেয়া হয়েছে।
হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ আর নির্বিচার হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদান। স্থানীয় সময় সোমবারও সুদানের উত্তর করদোফানে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস আরএসএফ-এর ড্রোন হামলায় প্রাণ হারায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক।
গত মাসের শেষের দিকে সুদানের উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশার শহর দখলের মধ্যদিয়ে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ ঘাঁটি নিয়ন্ত্রণে নেয় আরএসএফ। এর মধ্যদিয়ে দেশটির প্রায় এক চতুর্থাংশের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আরএসএফ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতরের তথ্যমতে, শহর দখলে নিতে বহু বেসামরিক নাগরিককে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। বাদ যাচ্ছে না ত্রাণকর্মীরাও। অক্টোবরের শেষ দিক থেকে উত্তর ও দক্ষিণ কোরদোফান অঞ্চল থেকে অন্তত ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
হত্যার পাশাপাশি নারীদের ওপর চালানো হচ্ছে পাশবিক নির্যাতন। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সুদানের আধা-সামরিক বাহিনী বলছে, তাদের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিতভাবে তথ্য ছড়াচ্ছে গণমাধ্যম।

এদিকে আরএসএফ-কে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তার অভিযোগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। বলা হচ্ছে, আমিরাতের মদদেই আধা-সামরিক বাহিনীটি দারফুর শহরকে নরকে পরিণত করেছে।
এ বিষয়ে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতেও বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও দেশটির বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দেয়া হয়েছে।
সুদানের দারফুর অঞ্চলে আরএসএফের বর্বর হামলা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি। সোমবার (৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে দেশটিতে চলমান সংঘাতে নিহত ও নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ ও দুঃখ করেছে আইসিসির প্রসিকিউটর অফিস।
সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর দ্বন্দ্বে দুর্ভিক্ষকবলিত সুদানে খাদ্য সংকটও তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির তথ্যমতে, দেশটিতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ মারাত্মক খাদ্য সংকটে রয়েছে।