সুদানের এল ফাশের এবং সমগ্র দারফুর অঞ্চলে মানবিক সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মালয়েশিয়া অবিলম্বে সব সহিংসতা বন্ধের জরুরি আহ্বান জানিয়েছে।মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘গভীর উদ্বেগজনক এক মহাবিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার এই ট্র্যাজেডিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আমি এল ফাশের এবং সুদানের দারফুর জুড়ে ঘটে চলা এই ট্র্যাজেডিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা যা দেখছি তা এক মানবিক মহাবিপর্যয়; যেখানে ব্যাপক গণহত্যা, অনাহার এবং বাস্তুচ্যুতি ঘটছে যা বিবেককে নাড়া দেয়।
তিনি আরও বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার সমতুল্য নৃশংসতার ঘটনাগুলো সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। মালয়েশিয়া অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের দাবি জানাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা সুদানের জনগণের পাশে আছি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও দুর্ভোগ রোধ করতে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ ফিরিয়ে আনতে এবং শান্তি ও জবাবদিহির দিকে একটি বিশ্বাসযোগ্য প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি।
উত্তর দারফুরের রাজধানী এল ফাশেরের পরিস্থিতিকে ২০২৩ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সুদানের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কয়েক মাস ধরে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের পর গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ শহরটি দখল করলে হাজার হাজার মানুষ সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
আল জাজিরা এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই অঞ্চলে ব্যাপক নৃশংসতা চলছে। এর মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নাগরিক হত্যা, নারী ও শিশুদের ওপর লক্ষ্য করে হামলা, হাসপাতাল ও স্কুল ধ্বংস করা এবং জাগাওয়ার মতো জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত নির্যাতন, যাদের সরকার সমর্থক বলে মনে করা হয়।

গত ১ নভেম্বর ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস’ এল ফাশেরে বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য চলমান সম্ভাব্য মারাত্মক সংকটের বিষয়ে সতর্ক করেছে। এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সংঘাতের সঙ্গে জড়িত সকল পক্ষকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি এই পরিস্থিতিকে ‘সংঘর্ষের এক ভয়াবহ বৃদ্ধি’ হিসেবে বর্ণনা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দৃঢ় অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান।