সূদূর ইরান থেকে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছিলেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অবৈধভাবে এদেশে রয়ে গিয়েছিলেন। গা ঢাকা দিয়েছিলেন বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামে। শুক্রবার রাতের অন্ধকারে সেখানকার সোনার দোকানে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন ইরানের দুই নাগরিক – বাবা ও কিশোর ছেলে। কালনার মন্তেশ্বরের হোসেনপুরে ধৃত দু’জনকে প্রহার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। শনিবার আদালতে তোলা হলে বাবার পুলিশ হেফাজত হয়, কিশোর ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জুভেনাইল হোমে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ভারতে প্রবেশ এবং থাকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তেষট্টির আলি মাহাবুবি ও ১৭ বছরের আমির আব্বাস মাহাবুবি সম্পর্কে বাবা-ছেলে। তাঁদের বাড়ি ইরানের রাজধানী তেহরানের খনিয়াবাদে। শুক্রবার রাতের অন্ধকারে মন্তেশ্বরের হোসেনপুরের মত প্রত্যন্ত একটি গ্রামে তাঁরা আসেন চারচাকার গাড়ি চড়ে। ওই গ্রামের ছোট্ট একটি সোনার দোকানে ঢোকেন। সোনার নাকছাবি, কানের দুল দেখতে চান। সেসব অলংকার দেখতে দেখতেই কৌশলে তিনটি সোনার নাকছাবি ও একটি কানের দুল হাতিয়ে পালাতে যান। তখনই দোকানদারের চিৎকার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে তাঁদের হাতেনাতে ধরে ফেলে। চলে মারধর।

দোকান মালিক বুদ্ধদেব হাজরা বলেন, “সন্ধ্যা ৭ টা ৪০ নাগাদ দু’জন একটি চারচাকা গাড়িতে চেপে আমার দোকানে আসেন। ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে তাঁরা কথা বলতে থাকেন। প্রথমে সেভাবে সন্দেহ না হলেও পরে এক ব্যক্তি সোনার অলংকার দেখার সময় কথা বলতে বলতে একটি নাকছাবি কায়দা করে সরিয়ে ফেলেন। তখনই সন্দেহ হয়। এরপরেই জিনিসপত্র নিয়ে ছুটে পালাতে গিয়ে তারা ধরা পড়ে যায়। এই দেখে ওই গাড়িটিও পালিয়ে যায়। থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।” মারধর চলাকালীন মন্তেশ্বর থানার পুলিশ খবর পেতেই তাঁদের জখম অবস্থায় উদ্ধার করেন। মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।