স্বর্ণমন্দিরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা

Spread the love

ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরই অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্বর্ণ মন্দিরের কোনও ক্ষতি হতে দেয়নি।এমনটাই জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর ১৫ নম্বর ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) মেজর জেনারেল কার্তিক সি শেষাদ্রি। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। জঙ্গি হামলার জবাবে গত ৭ মে মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জায়গায় আঘাত হানে ভারতীয় সেনা।এরপরেই পাকিস্তান সেনা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় হামলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, ভারত প্রত্যেকটি হামলা প্রতিহত করেছে।

বার্তা সংবাদ এএনআইকে জেনারেল কার্তিক সি শেষাদ্রি জানান,’পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কোনও বৈধ লক্ষ্যবস্তু নেই জেনেও আমরা ধারণা করেছিলাম যে, তারা ভারতীয় সামরিক নির্মাণ, ধর্মীয় স্থান-সহ অসামরিক নানা জায়গাকে লক্ষ্যবস্তু করবে। এরমধ্যে স্বর্ণমন্দিরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছিল। স্বর্ণমন্দিরে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষার জন্য ভারতীয় বাহিনীর তরফে অতিরিক্ত আধুনিক বিমান সুরক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল।’ 

আকাশ মিসাইল এবং এল-৭০ এয়ার ডিফেন্স গান ব্যবহার করেই পাকিস্তানের ছোড়া ড্রোন এবং মিসাইল ধ্বংস করে ভারত। কীভাবে ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম স্বর্ণমন্দিরকে রক্ষা করেছে, সোমবার হাতেকলমে তার নমুনাও দেখিয়েছে ভারতীয় সেনা।সেনাবাহিনী প্রদর্শনীর মাধ্যমে তুলে ধরে যে, কীভাবে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, এল-৭০ এয়ার ডিফেন্স গান-সহ ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অমৃতসরের স্বর্ণমন্দির এবং পাঞ্জাবের শহরগুলিকে পাকিস্তানি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা থেকে রক্ষা করেছিল।

মেজর জেনারেল বলেন, ‘যেহেতু আমরা পাকিস্তানের দিক থেকে এরকম কিছু আন্দাজ করে তৈরি ছিলাম তাই আমাদের সতর্ক এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং বাহিনীর সাহসী সদস্যরা সবকটি ড্রোন এবং মিসাইলকেই ধ্বংস করে। যার ফলে পবিত্র স্বর্ণমন্দিরের গায়ে আঁচড়ও লাগেনি।’ এর আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, দেশের বেশ কয়েকটি সেনাঘাঁটি, শহর লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান সেনা। সেই চেষ্টা ব্যর্থ করা হয়েছে। অমৃতসর, জম্মু, শ্রীনগর, পঠানকোট, জলন্ধর, লুধিয়ানা, চণ্ডীগড়, ভুজ লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা করেছিল পাক সেনা। 

আকাশ মিসাইল সিস্টেম

আকাশ একটি মাল্টি টার্গেট হ্যান্ডলিং-মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। আকাশ একটি মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, এটি একসঙ্গে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত একাধিক লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। ‘আকাশ’ ব্যাটারি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ১৮,০০০ মিটার উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।আকাশ বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ড্রোন, যুদ্ধবিমান, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মতো আকাশ হুমকিকে নিরপেক্ষ করার ক্ষমতা রাখে। এই কারণেই পাকিস্তান ভারতের উপর তাদের কোনও আক্রমণ সফলভাবে চালাতে পারেনি। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিশেষত্ব হল এটি যে কোন জায়গায় নেওয়া যায়। ট্রাক বা ট্যাঙ্কের সাহায্যে এটি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহন করা হয়। এই বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উন্নত সংস্করণের নাম আকাশ-এনজি।

এল-৭০ এয়ার ডিফেন্স গান

৭০-এর দশকে সুইডেন থেকে এই এয়ার ডিফেন্স গান আনা হয়েছিল। মিনিটে ৩০০ রাউন্ডেরও বেশি ফায়ার করতে পারে। রেঞ্জ ৩-৪ কিলোমিটার। রাডারের মাধ্যমেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সময়ের সঙ্গে এর প্রযুক্তি মর্ডানাইজ করা হয়েছে। এর ফলে এখন রাতের আঁধারেও এটি দিব্যি কাজ করে। হাই রেজোলিউশন সেন্সর, ক্যামেরা ও রাডার রয়েছে। এর ফায়ারিংয়েই মাঝ আকাশে গুঁড়িয়ে যায় শত্রুপক্ষের ড্রোন-মিসাইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *