মমতা শঙ্করের এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, তিনি তাঁর বাবা বা ছেলেকে কখনওই প্যাড কিনতে দিতে পারবেন না। আর তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয় ব্যপক চর্চা। স্যোশাল মিডিয়া জুড়ে অনেকেই তাঁদের নানা অভিজ্ঞতা ভাগ করে কটাক্ষ করেন মমতাকে, উগড়ে দেন ক্ষোভ। এমনকী তাঁকে নিয়ে নানা মিমও তৈরি হয়, যা কিছু কিছু ক্ষেত্রে শালীনতার মাত্রাকে ছাড়িয়ে যায়। এবার এই সবটা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে মমতার পাশে থাকলেন সুদীপা চট্টোপাধ্যায়।
সোমবার সুদীপা এই প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমের পাতায় লেখেন, ‘সম্প্রতি মমতা শঙ্করকে নিয়ে এই Gen Z দের পর পর রিক্যাশন ও আক্রমণ দেখে,মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল। কী রকম ধারালো সব লেখা… অনেকদিন ‘নাহ!… কিছু বলব না…’ ভেবেও,আজ আর পারলাম না..। আমার এ বিষয়ে দু একটা কথা আছে…। Celebrity bashing এখনকার একটা trend হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু কেন? কেন পান থেকে চুন খসলেই তাঁদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে, খাপ পঞ্চায়েত বসিয়ে দেবেন আপনারা? কোথায় কে ঠিক করে দিয়েছে সেলিব্রিটিদের সবসময় perfect হতে হবে? তার কি সমাজ সংস্কারক?’
সুদীপা Gen Z-দের উদ্দেশ্যে আরও লেখেন, ‘রাজনীতিবিদরা রোজ কত শত বাজে বলে যাচ্ছেন, কই? তাঁদের নিয়ে তো এত লেখা আর একরম হচ্ছে না? To my Gen Z ভাইরা (ওদের to সবাই ‘bro’) আমাকে শুধু তোমরা একটা উত্তর দেবে, সেলিব্রিটিদের কাছে এত প্রত্যাশা কেন? তাঁদের কেন সব সময় ভালো ভালো কথাই বলতে হবে? কী হয়েছে- তিনি নিজের মত প্রকাশ করেছেন তো? তাঁকে এত খারাপ খারাপ কথা বলার আগে, তাঁর বয়সটা একবার ভাববে না? বড়দের সঙ্গে এভাবে কথা বলা যায়, না বলা উচিত? তোমরা সবাই সব সময় ঠিক কাজই কর? ঠিক কথা বলো? আর এই ঔচিত্যমূলক জ্ঞান তোমরা নিজেরা সব সময় মেনে চলো? তিনি একজন বড় শিল্পী । আমাদের দেশের মাথা উঁচু করেছেন একবার নয়, বহুবার। তোমরা সবাই কে কি করছো ভাই যে তোমার কথা শুনতে হবে? তুমি কে তিনি ঠিক না ভুল বিচার করার? তোমাদের কার কি অবদান আছে এই সোসাইটিতে একটু বল তো? ওঁর মতো অভিনয় করতে পারবে? ওঁর মতো নাচতে পারো ক’জন? সবার আগে মনে রাখতে হবে তিনি বয়সে তোমাদের থেকে অনেকটা বড়। তাই, যে কোথা নিজের মা-পিসি-ঠাকুমা-দিদিমাকে বলতে পারো না, সে কথা খোলাখুলি সবার সামনে, ওঁকে বলছ কেন?’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের বাড়িতে গুরুজনের সবার সব কথা আমাদের সব সময় কি ভালো লাগে? সব কথা মানতে পারো? তখন কি তাদের ঠিক এইরকম কদর্য ভাষায় আক্রমণ করো? একবার রাগ না করে, ভেবে দেখ কথাটা? ওই স্যানিটারি প্যাডের বিজ্ঞাপন দেখতে আমার মা-ও পছন্দ করতেন না। তাঁকে আমরা আমাদের দিকটা বোঝাতে চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু, এভাবে আক্রমণ করাটা বোধহয় ঠিক নয়। আমি ওঁর কথা সমর্থন করছি না, তবে তোমাদের আক্রমণটাকেও সমর্থন করতে পারছি না। সবার আগে আমরা ভারতীয় । ভারতের সভ্যতার একটা ইতিহাস আছে। গ্লোবাল হতে গিয়ে সেটাকে বিসর্জন দিতে পারবো না। আমি যদি নাস্তিক হই-তাহলে কি মা দুর্গার মূর্তিতে কালি ছেটাবো? কেন ছেটাব না? কারণ আমাদের সভ্যতা আর শিক্ষা সেটা allow করে না। আমাকেও চাইলে আক্রমণ করো। আমার আর নতুন করে কষ্ট হয় না। অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, মমদিকে আমি চিনি। ভীষণ ভালো সাদামাটা একটা মানুষ। তিনি নিশ্চয়ই কষ্ট পান। আমি জানি তিনি সবাইকে আপন মনে করেন, আর কষ্ট পান। Please, stop it…।’