হামলা চালিয়ে যেভাবে খুন করা হয় হামাস নেতাকে

Spread the love

গত মাসে গাজার খান ইউনিসে ইউরোপীয় হাসপাতালের নীচে একটি ভূগর্ভস্থ অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছিল ইসরাইল। মঙ্গলবার (১৩ মে) এই হামলা হয়। এতে হামাস প্রধান মুহাম্মদ সিনওয়ার এবং মোহাম্মদ সাবানেহসহ ২৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। সম্প্রতি এই হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইসরাইল। তাতে দেখানো হয়েছে কিভাবে কথিত ভূগর্ভস্থ আস্তানা এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নির্মূল করার জন্য একটি নির্ভুল হামলা চালায় ইসরাইল ।

একটি থ্রিডি চিত্রে গাজার বাসিন্দাদের চিকিৎসার জন্য একটি ইউরোপীয় হাসপাতাল দেখানো হয়েছে। কিন্তু এখানে এর বেশি কিছু থাকার দাবি করেছে ইসরাইল। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) র দাবি  হাসপাতালের নীচে একটি ভূগর্ভস্থ অবকাঠামো রয়েছে। সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে হেঁটে গেলে কমান্ড-এন্ড-কন্ট্রোল কম্পাউন্ডে যাওয়া যায়। যা আইডিএফের মতে, ‘হামাসের যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র’ হিসেবে কাজ করত।

ইসরাইল সিকিউরিটিজ অথরিটি (আইএসএ) এর সহযোগিতায় আইডিএফ ওই ‘কমান্ড-এন্ড-কন্ট্রোল কম্পাউন্ডে’ থাকা হামাস যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে।

আইডিএফ জানায়, ‘ভূগর্ভস্থ অবকাঠামোটি বিস্তৃত এবং জটিল ধরনের ছিল এবং এটিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা সম্ভব হয়েছিল উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে।

গোয়েন্দা অধিদপ্তর এবং আইএসএর সাথে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় এবং দক্ষিণ কমান্ড এবং আইএএফের সুনির্দিষ্ট এবং কেন্দ্রীভূত পরিকল্পনার মাধ্যমে এই হামলা সম্ভব হয়েছিল বলে জানিয়েছে হামাস।


তবে আইডিএফ এটাও নিশ্চিত করেছে যে, এই হামলায় হাসপাতালের ভেতরের কর্মকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এটি শুধু মোহাম্মদ সিনওয়ার এবং মোহাম্মদ সাবানেহসহ হামাস গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে করা হয়েছিল।


আইডিএফ আরও জানায়, ‘হামলার আগে এবং হামলা চলার সময়, বেসামরিক ক্ষতির ঝুঁকি কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল নির্ভুল অস্ত্রের ব্যবহার, আকাশ পর্যবেক্ষণ এবং অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য।’


এদিকে, বুধবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছেন, ‘গাজার প্রধান মুহাম্মদ সিনওয়ার ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। আমরা মুহাম্মদ সিনওয়ারকে নির্মূল করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ২৮ মে ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটে মঞ্চ থেকে হিব্রু ভাষায় ভাষণ দিয়ে এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা  ইসমাইল হানিয়া, মোহাম্মদ দেইফ, ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং এখন মুহাম্মদ সিনওয়ারকে নির্মূল করেছি।’


মোহাম্মদ সিনওয়ার ছিলেন ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলের উপর হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই। গত বছরের ১৭ অক্টোবর সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে সাবেক হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হন।


তবে হামাস মোহাম্মদ সিনওয়ারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি এবং কোনো আনুষ্ঠানিক শোকসভা বা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়নি।

ইসরাইলি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য গাজায় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আইডিএফ এবং আইএসএ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *