হার্ট অ্যাটাকের নেপথ্যে কোভিড টিকা?

Spread the love

করোনার পর আচমকাই অনেক মানুষের অকালমৃত্যু নিয়ে নানা সময়ে নানা আলোচনা হয়েছে।করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর টিকা নেওয়ার জন্যই কি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বাড়ছে? দেশজুড়ে এই বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি হলেও, এবার সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।কোভিড-১৯ টিকা এবং অল্পবয়সীদের আচমকা হৃদরোগে মৃত্যুর মধ্যে কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই। এমনই তথ্য উঠে এসেছে অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ-এর সাম্প্রতিক যৌথ গবেষণায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকও এই তথ্যকে সমর্থন করেছে।

বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে করোনা টিকার সঙ্গে তরুণদের হার্ট অ্যাটাকের কোনও সম্পর্ক নেই।বরং ঝুঁকিপূর্ণ, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন এবং আগে থেকে শরীরে আগে থেকে বাসা বাঁধা রোগের জেরে অসময়ে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে পড়ছে।স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত প্রমাণ ছাড়া এমন দাবি অথবা ভাবনা জনসাধারণের মধ্যে ভ্যাকসিন সম্পর্কে অনাস্থা তৈরি করতে পারে। যা অতিমারীর সময় লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।’ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিবৃতিতে আকস্মিক মৃত্যুর পিছনে জেনেটিক্স এবং কোভিড-পরবর্তী জটিলতাকেও অসময়ে হৃদরোগের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই গবেষণা সামনে এল কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার এক বিতর্কিত মন্তব্যের ঠিক পরদিন। তিনি বলেছিলেন, টিকা অনুমোদন ও বিতরণে তাড়াহুড়ো করাই রাজ্যে তরুণদের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।তবে কেন্দ্রীয় সরকারের মতে, সিদ্দারামাইয়ার আশঙ্কার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, কোভিড টিকা সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ, বিশেষ করে তরুণদের ক্ষেত্রে।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ এবং ন্যাশনাল সেন্টার অফ ডিজিজ কন্ট্রোল ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে আকস্মিক মৃত্যুর কারণ বোঝার জন্য অনেকদিন ধরেই কাজ করছে। ২০২৩ সালের মে থেকে অগস্ট পর্যন্ত ১৯টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৭টি কেয়ার হাসপাতাল থেকে তথ্য নিয়ে গবেষণা হয়। এই গবেষণার মূল ফোকাস ছিল এমন কিছু কেস যেখানে আপাতদৃষ্টিকে কাউকে সুস্থ মনে করা হয়েছিল। কিন্তু আচমকাই ২০২১ থেকে মার্চ ২০২৩ সালের মধ্যে তিনি মারা যান। কিন্তু দীর্ঘ গবেষণার পরেও তরুদের হার্ট আট্যাকে মৃত্যুর সঙ্গে কোভিড-১৯ টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কোনও যোগ মেলেনি।

হাসান জেলায় একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, ‘তাড়াহুড়ো করে করোনা টিকাকে অনুমোদন ও বাধ্যতামূলকভাবে টিকাকরণ এই মৃত্যু কারণ হতে পারে। বিশ্বজুড়ে সম্প্রতিক অনেক গবেষণা হৃদরোগে মৃত্যুর কারণ হিসেবে এই টিকাকে দায়ী করেছে।’ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র হাসান জেলায় ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে। সরকার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে জয়দেব ইন্সটিটিউট অফ কার্ডিওভাস্কুলার সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক ডঃ রবীন্দ্রনাথের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে তাঁরা এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেবেন।’যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোভিড টিকার জন্য হৃদরোগের কারণকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, সম্প্রতি অভিনেত্রীর শেফালি জারিওয়ালার আকস্মিক মৃত্যুতে স্তম্ভিত মুম্বই।কেন মৃত্যু হল অভিনেত্রীর? শুক্রবার রাত থেকে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। পুলিশের তরফে সংবাদমাধ্যমকে এ দিন জানানো হয়েছিল, মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর তদন্তকারীরা মনে করছেন, শুধু বয়সজনিত ওষুধ নয়। রক্তচাপ অত্যন্ত কমে যাওয়ার ফলেও হৃদরোগে মৃত্যু হতে পারে শেফালির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *