জলবায়ু সংকটের কারণে হিমবাহ এবং বরফের স্তূপ গলে যাওয়ার ফলে আশঙ্কা রয়েছে বিস্ফোরক আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের– এমনই তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণায়।ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান মঙ্গলবার (৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, বরফ ক্ষয় হওয়ার ফলে ভূগর্ভস্থ ম্যাগমা চেম্বারে চাপ কমে যায় এবং অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কা বাড়ে। এই প্রক্রিয়াটি আইসল্যান্ডে দেখা গেছে, যেটি মধ্য-সমুদ্রের টেকটোনিক প্লেট সীমানায় অবস্থিত এক দ্বীপ। আর চিলির গবেষণাটি এ সংক্রান্ত প্রথম গবেষণাগুলোর মধ্যে একটি যা অতীতে, শেষ বরফ যুগের অবসানের পরে কোনো মহাদেশে আগ্নেয়গিরির তীব্রতা বৃদ্ধির প্রমাণ দেয়।
জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক তাপের কারণে এখন বিশ্বজুড়ে বরফের স্তূপ এবং হিমবাহ গলে যাচ্ছে। গবেষকরা বলছেন, পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকায় আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের পুনরুত্থানের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি রয়েছে, যেখানে ঘন বরফের নিচে আছে কমপক্ষে ১০০টি আগ্নেয়গিরি।
বিজ্ঞানীদের মতে, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত সূর্যালোক-প্রতিফলিত কণাগুলোকে বায়ুমণ্ডলে নিক্ষেপ করে গ্রহকে সাময়িকভাবে ঠান্ডা করতে পারে। তবে, ক্রমাগত অগ্ন্যুৎপাতের ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেনসহ উল্লেখযোগ্য গ্রিনহাউস গ্যাস বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়বে।
বলা হচ্ছে, এর ফলে পৃথিবী আরও উত্তপ্ত হবে এবং সম্ভাব্যভাবে একটি ‘দুষ্টচক্র’ তৈরি করবে, যেখানে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় বরফ গলে যাবে, যা আরও অগ্ন্যুৎপাত এবং আরও বৈশ্বিক উত্তাপের দিকে নিয়ে যাবে।
গবেষণার নেতৃত্ব দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলো মোরেনো-ইয়েগার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হিমবাহগুলো সরে যাওয়ার সাথে সাথে, আমাদের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে এই আগ্নেয়গিরিগুলো আরও ঘন ঘন এবং আরও বিস্ফোরকভাবে অগ্ন্যুৎপাত করছে।’

প্রাগে অনুষ্ঠিত এক ভূ-রসায়ন সম্মেলনে উপস্থাপিত এই গবেষণাটি একটি একাডেমিক জার্নালের পর্যালোচনার চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।