১টা হাত নেই! জেলের দেওয়াল টপকে পালাল ধর্ষণ-খুনের দণ্ডিত

Spread the love

কেরলের সেন্ট্রাল জেল থেকে পালাল ২০১১ সালের ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত একচল্লিশ বছরের গবিন্দাচামি। কান্নুর সেন্ট্রাল জেল থেকে তার পালানোর ঘটনায় হইচই পড়ে যায় গোটা রাজ্যে। তবে কয়েক ঘণ্টা জোরদার তল্লাশির পর থালাপ এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবনের কাছ থেকে গোবিন্দস্বামীকে পাকড়াও করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, দিনের শুরুতে সংশোধনাগারে রুটিন চেকআপের সময় দেখা যায় যে গবিন্দাচামি জেলের মধ্যে নেই। এরপরেই জেল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কারাগার প্রাঙ্গণে এবং তার আশেপাশে তল্লাশি অভিযান শুরু করে, কিন্তু ওই বন্দিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপরে চরম সতর্কতা জারি করে এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ।গবিন্দাচামিকে ধরতে পুলিশ কে-৯ স্কোয়াডও মোতায়েন করেছিল।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছ’টার পরেও সে সেল থেকে বাইরে ঘোরাফেরা করছে। প্রাথমিক অনুমান ছিল, সেলে ঢোকেনি সে। পরে নিশ্চিত হয়, এই ঘটনা পরিকল্পিত এবং দীর্ঘদিন ধরেই পালানোর ছক কষছিল গবিন্দাচামি। জেল সূত্রে খবর, গবিন্দাচামি এক হাতে জেলের ৭.৫ মিটার উঁচু প্রাচীর টপকে পালিয়েছে। প্রাচীরের উপর রয়েছে বৈদ্যুতিক তারের বেষ্টনীও। জেল ব্লক-১০-এর সেলে বন্দি ছিল গবিন্দাচামি। গোপনে একটি করাতজাতীয় অস্ত্র জোগাড় করে সে তার সেলের লোহার গ্রিল কেটে দেয় এবং ভোররাতে দেওয়াল টপকে পালিয়ে যায়। কয়েক ঘন্টা ধরে টানা তল্লাশির পর গবিন্দাচামির সন্ধান পায় পুলিশ।

২০১১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, ২৩ বছরের এক তরুণী কোচি থেকে শোরনুরগামী একটি লোকাল ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন। ট্রেনের মধ্যেই তাঁর উপর হামলা চালায় গবিন্দাচামি। অভিযোগ, চলন্ত ট্রেনে তাকে ধর্ষণ করার পর বাইরে ছুড়ে ফেলে দেয় অভিযুক্ত। ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান তরুণী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছর ৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় তাঁর।পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনশীল। কিছুদিন পরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল সৌম্যার। কেরল হাইকোর্ট এই মামলায় গবিন্দাচামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট সেই সাজা বাতিল করে। আদালত জানায়, খুন প্রমাণ করা না গেলেও ধর্ষণের অভিযোগে সে দোষী। তাই যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকবে।

মৃতার মায়ের প্রতিক্রিয়া

নির্যাতিতার মা মেয়ের ধর্ষক পালানোর ঘটনায় হতবাক। তাঁর প্রশ্ন, কীভাবে এমন ত্রুটি ঘটতে পারে। সুম্য বলেছেন, ‘কান্নুর জেল বিশাল। সে কীভাবে সেখান থেকে লাফিয়ে পালাতে পারে? সাহায্য ছাড়া সে তা করতে পারে না। এটা অসম্ভব। ভেতরে কেউ ওকে সাহায্য করছে। ওর শুধু একটি হাত আছে এবং জেলের দেওয়াল বিশাল। ওকে অবিলম্বে ধরা উচিত। আমার মনে হয় না যে ও এখনও কান্নুর ছেড়ে চলে গেছে।’

অন্যদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন কারা ব্যবস্থায় গুরুতর ত্রুটির অভিযোগ করেছেন। গবিন্দাচামি পালানো পুরোটাই পরিকল্পিত কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বলেছেন, ‘কুখ্যাত অপরাধী রাত একটায় পালিয়ে যায়। কারা কর্তৃপক্ষ ভোর পাঁচটায় এ বিষয়টি জানতে পারে। সকাল সাতটায় পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। দেয়ালে বৈদ্যুতিক বেড়া দেওয়া ছিল। জেল থেকে পালানোর সময় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সব কিছুই রহস্য। সে কি পালিয়েছিল, নাকি তাকে পালাতে সাহায্য করা হয়েছিল?’ এই প্রসঙ্গে সুরেন্দ্রন স্মরণ করিয়ে দেন যে, সিপিআই(এম) নেতা পি জয়রাজন এবং থ্রিকারিপুরের স্থানীয় বিধায়ক কারা উপদেষ্টা কমিটিতে আছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *