৩২ বছর বয়সে আমেরিকার জার্সিতে ঐতিহাসিক শতরান সেই তারকা ক্রিকেটারের

Spread the love

ভারতের হাজার হাজার ক্রিকেটার টিম ইন্ডিয়ার হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু এত বেশি প্রতিযোগী আছে যে, ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে কঠোর পরিশ্রম করার পরেও, ভারতীয় দলে জায়গা পাচ্ছেন না অনেকেই। তাই অনেক সময়েই, তাঁদের স্বপ্ন পূরণের জন্য, তাঁরা অন্য দেশে গিয়ে খেলতে বাধ্য হচ্ছে। ভারতের এমনই দুই খেলোয়াড় আমেরিকার হয়ে ক্রিকেট খেলছেন। সম্প্রতি তাঁরা আমেরিকার হয়ে ওয়ানডে-তে রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছেন।

প্রকৃতপক্ষে, আমেরিকা এবং কানাডা ১৭ মে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ লিগ-টু ২০২৩-২৭-এর একটি ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। এই ম্যাচে, ১৩ বছর আগে টিম ইন্ডিয়ার হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী স্মিত প্যাটেল ১৩৭ বলে ১৫২ রানের ঝোড়ো একটি ইনিংস খেলেছেনন। তাঁর পাশাপাশি মিলিন্দ কুমার আবার ৬৭ বলে ১১৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে সেহওয়াগের রেকর্ডকে স্পর্শ করেছেন।

ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ স্কোর

আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ লিগ-টু ২০২৩-২৭-এর ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ১৬৯ রানের বিশাল জয় পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই জয়ের নায়ক ছিলেন ভারতের স্মিত প্যাটেল এবং মিলিন্দ কুমার জুটি। স্মিত ১৩৭ বলে ১৫২ রান করেন। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১২টি চার এবং ৪টি ছক্কায়। মিলিন্দ কুমার ৬৭ বলে ১২টি চার এবং ৫টি ছক্কার সাহায্যে ১১৫ রান করেন। তিনি মাত্র ৬০ বলে তাঁর সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এবং দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেহওয়াগের রেকর্ড স্পর্শ করেন। ২০০৯ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেহওয়াগ ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন।

এই ম্যাচে চতুর্থ উইকেটে মাত্র ১২৫ বলে ২০৮ রানের বিস্ফোরক জুটি গড়েন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই জুটি। দু’জনের এই ইনিংসের সুবাদে আমেরিকান দল ৫০ ওভারে ৩৬১ রানের বিশাল স্কোর করে। এটি ওয়ানডে-তে আমেরিকার সর্বোচ্চ স্কোর। পাহাড় প্রমাণ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কানাডিয়ান দল চাপে পড়ে যায়। পুরো দল মাত্র ১৯২ রানে অলআউট হয়ে যায়। যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৬৯ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করে।

স্মিত প্যাটেল অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন

২০১২ সালে উন্মুক্ত চাঁদের নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের অংশ ছিলেন স্মিত প্যাটেল। সেবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে ২২৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারত ৯৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল। এরপর প্যাটেল ৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। অধিনায়ক উন্মুক্ত চাঁদ অপরাজিত ১১১ রান করেন। ১৩০ রানের জুটি গড়ে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করে প্যাটেল-চাঁদ জুটি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে, স্মিত প্যাটেল ভারতীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে বরোদা, গোয়া, গুজরাট এবং ত্রিপুরার হয়ে খেলেছেন। এই সময়কালে, তিনি ৩২৭৮ রান করেছিলেন, যার মধ্যে ১১টি সেঞ্চুরি ছিল। তবে, তিনি কখনও টিম ইন্ডিয়ায় জায়গা করে নিতে পারেননি। ২০২১ সালে, তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন, যার ফলে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে খেলার সুযোগ পান।

মিলিন্দ কুমার আইপিএল খেলেছেন

অন্যদিকে, মিলিন্দ কুমার দিল্লির বাসিন্দা। আমেরিকা যাওয়ার আগে, তিনি ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে দিল্লি, সিকিম এবং ত্রিপুরার হয়ে খেলেছেন। তিনি ২০১৮-১৯ রঞ্জি ট্রফিতে ১৩৩১ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীও ছিলেন। মিলিন্দ আইপিএলেও অংশগ্রহণ করেছেন। আইপিএলের সপ্তম মরশুমে, তাঁকে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (বর্তমানে দিল্লি ক্যাপিটালস) ১০ লক্ষ টাকায় কিনেছিল।

২০১৯ সালের আইপিএলে, বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু তাঁকে ২০ লক্ষ টাকায় কিনেছিল। তবে ২০২০ সালের নিলামের আগে আরসিবি তাঁকে ছেড়ে দেয়। এর পর, তিনি ২০২১ সালের জুনে ইউএসএ মাইনর লিগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টে এবং ২০২৩ সালে মেজর লিগে খেলার সুযোগ পান। ২০২৪ সালে, মিলিন্দ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে তাঁর ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি অভিষেক করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *