৯০ হাজারে শিশুকে কিনে ৩৫ লাখে বিক্রি

Spread the love

সারোগেসির নামে অন্যের শিশুকে বিক্রি করে টাকা কামাচ্ছিল একটি ক্লিনিক। রবিবার সেই ক্লিনিকে হানা দিয়ে এক চিকিৎসক-সহ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে হায়দরাবাদের নর্থ জোনের গোপালপুরম থানা এলাকায়।এক দম্পতির অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত। আর তারপরই এই ক্লিনিকের পর্দাফাঁস করে পুলিশ।

জানা গেছে, সারোগেসির মাধ্যমে এক দম্পতিকে সন্তান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একজন প্রজনন চিকিৎসক। অভিযোগ, সম্প্রতি ডাঃ নম্রথা ওই দম্পতির কোলে তাঁদের সন্তানকে তুলে দেন। এরপরেই বেরিয়ে আসে আসল সত্য। ওই দম্পতি দেখেন, তাঁদের সঙ্গে ওই শিশুটির ডিএনএ-র কোনও মিল নেই।সন্তানের আশায় ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে গোপালপুরমের ‘ইউনিভার্সাল সুষ্ঠি ফার্টিলিটি সেন্টার’-এ ডঃ নম্রথার কাছে গিয়েছিলেন ওই দম্পতি।অভিযোগ, চিকিৎসক ওই দম্পতিকে আইভিএফ-এর পরিবর্তে সারোগেসির পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে জানান, ক্লিনিকই তাঁদের জন্য সারোগেট মায়ের ব্যবস্থা করবেন তিনি।কয়েকদিন পর ক্লিনিকের তরফে জানানো হয় সারোগেট মাকে পাওয়া গিয়েছে এবং তাঁর শরীরে ভ্রুণ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

এরপর ঠিক নয় মাস পর চলতি বছরের জুন মাসে, ওই দম্পতির হাতে ক্লিনিক একটি শিশুকে তুলে দেয়। প্রথমে তাঁদের সন্দেহ না হলেও, সম্প্রতি সন্তানকে নিয়ে ওই দম্পতির সন্দেহ হয়। সম্প্রতি একটি জায়গা থেকে ওই শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করান দম্পতি। তখনই সমস্ত সত্যি সামনে আসে।পরীক্ষাতে দেখা যায়, শিশুটির সঙ্গে তাঁদের কারও ডিএনএ মেলেনি।এরপরেই ক্লিনিকে গিয়ে প্রতিবাদ করেন তাঁরা। তবে সেখান থেকে তাঁদের বের করে দেওয়া হলে পুলিশে অভিযোগ জানায় ওই দম্পতি। আর পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে বেআইনিভাবে ভুয়ো সার্টিফিকেট দেখিয়ে ক্লিনিক চালাচ্ছিলেন নম্রতা নামের ওই চিকিৎসক। এর আগে বহুবার চিকিৎসা সংক্রান্ত ত্রুটির জন্য লাইসেন্স বাতিল হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া এবং বিশাখাপত্তনমে অবৈধভাবে ক্লিনিক চালাচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, নম্রথা ওই দম্পতির কাছ থেকে সারোগেসির জন্য ৩৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। অথচ শিশুটির আসল বাবা-মাকে মাত্র ৯০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন তিনি।

পুলিশ জানিয়েছে, এই ফার্টিলিটি সেন্টারটিতে এজেন্ট ছিল। ওই এজেন্টরা সেই সব মহিলাদেরকে খুঁজে বের করত যারা অর্থের বিনিময়ে তাঁদের সন্তানদের বিক্রি করতে চান। জানা গিয়েছে, ওই শিশুটির আসল বাবা-মা অসমের বাসিন্দা। তাঁরা হায়দরাবাদে থাকতেন। সেই দম্পতির কাছ থেকে কেনা হয়েছিল শিশুটিকে। ইতিমধ্যে হায়দরাবাদ পুলিশ নম্রথা-সহ মোট আটজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে একজন অ্যানাস্থেসিওলজিস্ট এবং ওই শিশুর আসল বাবা-মাও রয়েছেন।পুলিশ ডঃ নম্রথা এবং অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *